পার্বত্য চট্টগ্রামে ইউপিডিএফ-এর ডাকা ২দিনের সড়ক ও নৌপথ অবরোধ শান্তিপূর্ণ ও স্বতঃস্ফুর্তভাবে পালিত

0

ডেস্ক রিপোর্ট, সিএইচটিনিউজ.কম
পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সকল সংখ্যালঘু জাতিসমূহকে বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দেয়ার প্রতিবাদে এবং পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের দাবিতে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর ডাকে ২০ জুলাই সকাল ৬টায় শুরু হওয়া দুই দিনের সড়ক ও নৌপথ অবরোধ শান্তিপূর্ণভাবে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হয়েছে। অবরোধ চলাকালীন খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলা শহর সহ সকল উপজেলায় অভ্যন্তরীণ ও দুরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ ছিল৷ কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়াযায়নি

গতকাল বুধবার অবরোধের প্রথম দিন বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেলায় পালিত হয়। প্রথমদিন অবরোধ পালনের সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনী বিভিন্ন জায়গায় পিকেটারদের বাধা প্রদান করে। অবরোধের সমর্থনে পিকেটিং করার সময় বান্দরবানের মেঘলা থেকে ২ জন স্কুল ছাত্র এবং খাগড়াছড়ির গুইমারারা যৌথ খামার থেকে ৪ জন গ্রামবাসীকে সেনাবাহিনী আটক করে। পরে গুইমারা থেকে আটককৃতদের গুইমারা থানা থেকে ছেড়ে দিলেও বান্দরবান থেকে আটককৃতদের জেল হাজতে পাঠানো হয়।

আজ বৃহস্পতিবার অবরোধের দ্বিতীয় দিনেও খাগড়াছড়ি শহরে পিকেটিং করার সময় পুলিশ পিকেটারদের বাধা দেয়। এ সময় খাগড়াছড়ি শহরে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পাশাপাশি সেনা টহলও জোরদার করা হয়৷ একই সাথে প্রশাসন ভ্রাম্যমান আদালতও বসায়।

ইউপিডিএফ-এর কেন্দ্রীয় নেতা উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমা অবরোধ কর্মসূচি পালনে সহযোগিতা করায় খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলার সকল সড়ক ও নৌ পরিবহন (ট্রাক, বাস, মিনিবাস, জিপ, সিএনজি, অটো রিক্সা, লঞ্চ, নৌ-যান ইত্যাদি) মালিক সমিতি ও পরিবহন শ্রমিক সংগঠনসহ পাহাড়ি-বাঙালি সাধারণ জনগণের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

তিনি সরকারের প্রতি পাহাড়ি জনগণকে জোর করে বাঙালি বানানোর প্রচেষ্টা পরিহার করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে বহু জাতি ও ভাষাভাষীর লোকের বসবাস৷ তাদের প্রত্যেকের নিজ নিজ জাতীয় পরিচয়, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি নিয়ে বাস করার অধিকার আছে৷ এক-জাতি রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি৷

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর শেখ মুজিবর রহমান সংবিধানে পাহাড়িসহ দেশের সংখ্যালঘু জাতির জনগণকে বাঙালি হিসেবে পরিচিত করে যে ঐতিহাসিক ভুল করেছিলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করলেন” মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এই ভুল অবিলম্বে সংশোধন করা না হলে তার খেসারত একদিন দিতে হবে।”

তিনি বলেন, পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে যোগাযোগ ও আদান-প্রদানের ইতিহাস বহু শতাব্দী পুরনো। আমাদের পূর্ব পুরুষরা অতীতে কেউ নিজেদের বাঙালি বলে পরিচয় দেননি; অপরদিকে বাঙালিদের পূর্ব পুরুষরাও পাহাড়িদের কোন দিন বাঙালি বলে সম্বোধন করেননি বা এখনো কেউ করেন না৷ কাজেই সাংবিধানিকভাবে জোর করে পাহাড়িদেরকে বাঙালি জাতির মধ্যে বিলীন করার মাধ্যমে সরকারের চরম অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিস্ট চরিত্রই ফুটে উঠেছে।

তিনি অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের বসবাসরত সকল সংখ্যালঘু জাতিসমূহকে নিজ নিজ জাতীয় পরিচয়ে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল, পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিশেষ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহনী প্রত্যাহার ও সেটলার বাঙালিদের সমতলে সম্মানজনক পুনর্বাসন ও পাহাড়িদের প্রথাগত ভূমি অধিকারের স্বীকৃতির দাবি জানান।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More