পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি অনুপ্রবেশ অব্যাহত
নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি।। পার্বত্য চট্টগ্রামে বহিরাগত বাঙালিদের অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। প্রায় সময়ে খাগড়াছড়ি বাসস্ট্যান্ডের আশে পাশে খোলা জায়গায় খুপড়ি বেঁধে বহিরাগত বাঙালিদের থাকতে দেখা যায়। এখানে কয়েকদিন থাকার পর তারা জেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
গত কয়েকদিন ধরে খাগড়াছড়ি বাসস্টেশনের পাশে শান্তি নিকেতন এলাকায় নতুন আসা দুই গ্রুপ সেটলার খুপড়ি খাটিয়ে অবস্থান করছে।
গত রবিবার (২৪ এপ্রিল) এদের একটি গ্রুপের সর্দার নরু ইসলামের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, তারা দুই গ্রুপে আনুমানিক ৩০ জন গত মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) থেকে সেখানে অবস্থান করছেন। তিনি নিজেদেরকে বেদে পরিচয় দিয়ে বলেন, তারা ইতিপূর্বে বিভিন্ন সময় মাটিরাঙ্গা, মহালছড়ি ও দীঘিনালাসহ তিন পার্বত্য জেলায় বেদের খেলা দেখাতে ঘুরে বেড়িয়েছেন।
তিনি বলেন, “গত ১লা বৈশাখে আর্মিরা আমাদেরকে খাগড়াছড়ি সদরে নিয়ে আসে”।
বহিরাগতদের অন্য সর্দারের নাম দেলোয়ার হোসেন (৭০) তার নিবাস কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম বলে এই প্রতিবেদককে জানান। এরপর এখান থেকে কোথায় যাবেন জিজ্ঞেস করা হলে তা তিনি জানেন না বলে উত্তর দেন। তবে জেলার কোথাও জায়গা করে নিয়ে বসতি স্থাপন করবেন বলে তিনি জানান।
অনুপ্রবেশকারীরা দুই গ্রুপে ১০-১২ টি খুপড়িতে বসবাস করছে। তাদের পরিবারের সংখ্যা ঐ রকম হবে। তাদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। দেলোয়ার ও নরু ছাড়াও আরো যাদের সাথে এই প্রতিবেদকের কথা হয় তারা হলেন- মিরসরাইয়ের জোড়ালগঞ্জ থানার মধ্যম সোনা পাহাড় গ্রামের বাসিন্দা তারেক (২৫), মো: রবিউল ইসলাম (২১) ও মো: ইকবাল (২০)। তারা সবাই নরু ইসলামের সাথে এসেছেন। নরুর বাড়িও মিরসরাইয়ের মধ্যম সোনা পাহাড় গ্রামে।
খাগড়াছড়ি বাস স্টেশনের পাশের এক দোকানদার এই প্রতিবেদককে জানান, প্রায় প্রতি মাসে সমতল জেলা থেকে বাঙালিরা বাসে এসে স্টেশনে নেমে আশে পাশে খুপড়ি বানিয়ে থাকে। পরে সেখান থেকে অন্যত্র তাদেরকে পুনর্বাসন করা হয়। বহিরাগতরা একদিকে পাহাড়ের সৌন্দর্য্য নষ্ট করছে এবং অন্যদিকে যেখানে সেখানে মূলমত্র ত্যাগ করে পরিবেশ দূষিত করছে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের এক সদস্যকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তিনিও শুনেছেন প্রায় সময় বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ ঘটছে। তবে খাগড়াছড়ি বাস টার্মিনালের পাশে অবস্থানরত সেটলারদের ব্যাপারে অবহিত নন বলে তিনি জানান। তিনি বলেন- জেলা পরিষদের আইন অনুযায়ী এভাবে বহিরাগত অনুপ্রবেশ অবৈধ। তিনি এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করবেন বলে জানান।
ইউপিডিএফ-এর এক নেতা অনি চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধ বহিরাগত অনুপ্রবেশ অব্যাহত থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার পাহাড়িদের জাতীয় অস্তিত্ব ধ্বংস করতে পরিকল্পিতভাবে গোপনে সেটলার পুনর্বাসন করছে। তিনি অবিলম্বে সেটলার পুনর্বাসন বন্ধের দাবি জানান।
—————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।