পার্বত্য ভূমি কমিশনের গণবিজ্ঞপ্তি জারি : আমরা আশাবাদী নই, আশঙ্কিত
।। রাম্রাচাই মারমা ।।
গত ৮ সেপ্টেম্বর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন। কমিশনের সচিব মোঃ রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এই গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে “সংক্ষুব্ধ যে কোন ব্যক্তি ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন ২০০১ এর ৯ ধারা মোতাবেক সংশ্লিষ্ট আবেদনকারী তার দস্তখত বা টিপসহিযুক্ত দরখাস্ত সাদা কাগজে সরাসরি অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে অথবা ডাকযোগে কমিশনের কাছে আবেদন করতে পারবে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে পরবর্তী ৪৫দিন পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করা হবে। পূর্বে দরখাস্ত করলে তা বর্তমান দরখাস্তে উল্লেখ করতে হবে।”
জানা গেছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর রাঙামাটিতে অনুষ্ঠিত কমিশনের প্রথম বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নাকি এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।আসলে সে বৈঠকে কি গণবিজ্ঞপ্তি জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল?
একই ধারাবলে পূর্ববর্তী ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান খাদেমুল ইসলাম চৌধুরীও একতরফা গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে বিতর্কিত হয়েছিলেন। সে সময় তার এই একতরফা সিদ্ধান্ত পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণ মেনে নেয়নি এবং ব্যাপক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখা দিয়েছিল।ফলে তিনি আর কমিশনের কাজ এগিয়ে নিতে পারেননি এবং কমিশনেও থাকতে পারেননি।
বর্তমান কমিশনও এই গণবিজ্ঞপ্তি জারি করার আগে পার্বত্য চট্টগ্রামের হেডম্যান, কার্বারী, জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় জনগণের কাছ থেকে কোন মতামত গ্রহণ করেনি। তাই সন্দেহ হচ্ছে এই কমিশনও আগের কমিশনের পদাঙ্ক অনুসরণ করছে কি-না। নাহলে কারোর মতামত গ্রহণ না করে হঠাৎ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারির উদ্দেশ্য কি হতে পারে? আশঙ্কার জিনিসটা মূলত এখানেই।
পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি সমস্যার মুলে সেটলার অনুপ্রবেশ ও তাদের দ্বারা পাহাড়িদের জায়গা-জমি বেদখল। এ বিষয়টি কমিশনের আইনে কোথাও উল্লেখ নেই। ফলে সেটলারদের দ্বারা পাহাড়িদের যেসব জায়গা-জমি বেদখল হয়েছে সেসব জমি তারা ফিরে পাবে কিনা সে নিশ্চয়তাও কমিশনে নেই।
কারোর মতামত না নিয়ে তাড়াহুড়ো করে এই গণবিজ্ঞপ্তি জারি এটাই প্রমাণ করে যে, বর্তমান কমিশনও খাদেমুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন কমিশনের পদাঙ্ক অনুসরণ করছে। কাজেই, বর্তমান কমিশনের কাজেও আমাদের আশাবাদী না করে আশঙ্কিত করে তুলছে।
[মুক্তমত বিভাগে প্রকাশিত লেখাগুলো লেখকের নিজস্ব মতামতই প্রতিফলিত ]
—————————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।