ফুলমনি মার্ডীর উপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে ঢাকায় জাতিসত্তা মুক্তিসংগ্রাম পরিষদের বিক্ষোভ
সিএইচটিনিউজ.কম
ঢাকা: দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার খালিকপুর ডারকামারি গ্রামের আদিবাসী নারী ফুলমনি মার্ডীর উপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে জাতিসত্তা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ আজ ১৭ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকাল ৫ টায় ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর সবুজ মিয়ার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী কর্তৃক ভূমি দস্যুদের হামলায় নিহত ঢুডু সরেনের স্ত্রী ফুলমনি মার্ডীর উপর এ হামলা চালানো হয়।
জাতিসত্তা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি এস.সি আলবার্ট সরেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতিসত্তা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ জাতীয় পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি মাইকেল চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নিরূপা চাকমা ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের যুগ্ম আহ্বায়ক এমএম পারভেজ লেনিন।
সভা পরিচালা করেন জাতিসত্তা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ জাতীয় পরিষদের সদস্য ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সম্পাদক অংগ্য মারমা।
সমাবেশে সভাপতি এসসি আলবার্ট সরেন বলেন, গত ২ আগস্ট দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার আদিবাসী ঢুডু সরেনকে ভূমিদস্যু ডা: গোফফার ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা করে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করে। আদিবাসী জনগনের আন্দোলনের মূখে পুলিশ খুনী গোফফারকে হত্যার ঘটনার একমাস পরে গ্রেফতার করলেও অন্যান্য খুনিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। সন্ত্রাসী সবুজ মিয়া খুনী গোফফারের সহযোগী। ১৫ সেপ্টেম্বরে ঢুডু সরেনের স্ত্রী ফুলমনি মার্ডীর ওপর হামলা প্রমাণ করে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ আদিবাসী জনগণের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
আলবার্ট সরেন আরো বলেন ঢুডু সরেনের হত্যাকারী, ২০১১ সালে তার ভ্রাতা গোঁসাই সরেনের হত্যাকারী ও ১৯৬৪ তার পিতা ফাগু সরেনের হত্যাকারী খুনী ডা: গোফফার ও তার পরিবারের সদস্যদের আগামী ১ মাসের মধ্যে গ্রেফতার করা না হলে নাবাবগঞ্জ উপজেলা অফিস ও জেলা প্রসাশকের কার্যালয় আদিবাসী জনগণ ঘেরাও করবে।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম বলেন, বর্তমান সংবিধান-পঞ্চদশ সংশোধনী বাংলাদেশের শ্রমিক কৃষক ও জাতিগত ভাষাগত সংখ্যালঘু জনগণের জীবন সম্পদের কোন নিরাপত্ত দিতে পারেনি। জনগনের দরকার নতুন সংবিধান। তিনি কালশীতে উর্দুভাষীদের হত্যার বিচার দাবী করেন।
মাইকেল চাকমা বলেন, বাংলাদেশ একটি বহুজাতিক দেশ। এদেশের সমতল ও পাহাড়ে বসবাসরত বাঙালি ভিন্ন ৪৫ টিরও বেশী জাতিসত্তার জনগণকে জাতিগত স্বীকৃতি, অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ভূমির উপর কর্তৃত্ব কায়েমের জন্য ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।
হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নিরূপা চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামরে পাহাড়ি নারীরা আজ চরম নিরাপত্তা হীনতায় ভূগছে। শুধু পাহাড়ি নারী নয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের উপরে যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটছে। আমরা এর নিন্দা জানাই।
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক এমএম পারভেজ লেনিন বলেন, বাংলাদেশের ক্ষুদ্র জাতিসত্তার শিশুদের মাতৃভাষায় শিক্ষার কোন অধিকার নেই।
সমাবেশ শেষে প্রেসক্লাব থেকে একটা মিছিল পল্টন ঘুরে আবার প্রেসক্লাবে সামনে এসে শেষ হয়।
————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।