বিজিবি’র ৫১ ব্যাটালিয়ন প্রত্যাহারের দাবিতে খাগড়াছড়িতে তিন সংগঠনের বিক্ষোভ
সিএইচটিনিউজ.কম
খাগড়াছড়ি : দীঘিনালার যত্ন কুমার ও শশী মোহন কার্বারী পাড়া থেকে বিজিবি’র ৫১ ব্যাটালিয়ন প্রত্যাহার এবং উচ্ছেদকৃত ২১ পাহাড়ি পরিবারকে নিজ নিজ বাস্তুভিটা ও জমি ফিরিয়ে দেয়ার খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।
শনিবার (১৪ মার্চ) বিকাল ২.৩০টায় খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে মা’জন পাড়ার দিকে যেতে চাইলে পুলিশ চেঙ্গী স্কোয়ার এলাকায় বাধা দেয়। এরপর সেখানে এক সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন-গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা আহ্বায়ক জিকো ত্রিপুরা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের জেলা শাখার অর্থ সম্পাদক সুনীল ত্রিপুরা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মেনাকি চাকমা।
সমাবেশে জিকো ত্রিপুরা বলেন, বাবুছড়ায় বিজিবি কর্তৃক উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলো সবাই ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী। সরকারের ২০ দফা প্যাকেজ চুক্তির আওতায় তারা নিজেদের বসতভিটায় ফিরে এসেছেন। চুক্তি অনুযায়ী সরকার তাদের পুনর্বাসন করার কথা থাকলেও উপরন্তু তাদেরকে আবারো নিজ বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। তাদের বসতভিটা ও জায়গা-জমি বেদখল করে বিজিবি স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করছে।
সুনীল ত্রিপুরা বলেন, যত্ন কুমার ও শশী মোহন কার্বারী পাড়া থেকে উচ্ছেদ হওয়া ২১ পরিবারের মধ্যে শিশু-বৃদ্ধ ও স্কুল ছাত্র সহ ৮৫ জন মানুষ বর্তমানে অনাহারে-অর্ধাহারে খুবই মানবেতর জীবন যাপন করছে। অথচ সরকার তাদের সহযোগিতায় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। সরকারের এই বৈষম্যমূলক আচরণ কিছুতেই আর চলতে দেয়া যায় না। এর বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
মেনাকি চাকমা তার বক্তব্যে বলেন, পাহাড়ি নারীরা একদিকে ধর্ষণ সহ নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, অন্যদিকে ভূমি বেদখলকে কেন্দ্র করে নারীরা চরম অনিরাপত্তায় রয়েছে। বিজিবি ৫১ব্যাটালিয়ন এর সদর দফতর স্থাপনের নামে উচ্ছেদ হওয়া ২১ পরিবারের মধ্যে অন্তঃসত্তা নারীও রয়েছেন। যারা সবচেয়ে বেশি কষ্টকর অবস্থায় দিনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন।
সমাবেশ থেকে বক্তারা বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর অন্যত্র স্থানান্তর, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও উচ্ছেদ হওয়া ২১ পরিবারকে নিজ জমিতে পূনর্বাসনের দাবিতে আগামীকাল ১৫ মার্চ দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটির ঘোষিত বিজিবি ৫১ নং ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, প্রশাসন যদি জনগণের এই কর্মসূচিকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে তাহলে ছাত্র-যুব সমাজ তা মেনে নেবে না। বক্তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য দীঘিনালাবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
বক্তারা অবিলম্বে যতœ কুমার ও শশী মোহন কাবার্রী পাড়া থেকে বিজিবি ৫১ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর প্রত্যাহার করে উচ্ছেদ হওয়া ২১ পাহাড়ি পরিবারকে নিজ নিজ জমিতে পুনর্বাসন ও তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
——————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।