ভূমিদস্যুতা থেকে রক্ষার দাবিতে আলী কদমে মুরুংদের স্মারকলিপি
ডেস্ক রিপোর্ট, সিএইচটিনিউজ.কম
ভূমিদস্যুতা ও চাঁদাবাজির কবল থেকে রক্ষার দাবি জানিয়ে আলীকদমের দুপ্রু ঝিরি এলাকার মুরুং অধিবাসীরা বান্দরবান জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন। গতকাল ২১ মার্চ ২০১১ সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রদত্ত এ স্মারকলিপিতে বলা হয় রেপারপাড়ির শামশুর দ্বারা মুরুংরা শতবছরের ভোগ দখলীয় ভূমি থেকে উচ্ছেদ হুমকিতে রয়েছে। উপজেলার চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের দুপ্রু ঝিরি এলাকার পাক্কাই মুরুং পাড়ার কার্বারী (পাড়াপ্রধান) হাথোয়াই মুরুংসহ ৪০ জন মহিলা ও পুরুষের স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, একই ইউনিয়নের রেপারপাড়ির মৃত নুর আহামদের ছেলে শামশুল আলম কর্তৃক গত ৭/৮ বছর ধরে মুরুংরা জিম্মি রয়েছে। শতবছর ধরে সেখানে মুরুং পাড়াটি বিদ্যমান থাকলেও শামশু নামে এ ব্যক্তি ওই এলাকায় কয়েক বছর পূর্বে বসতি গড়ে তুলে। এরপর থেকে মুরুংদের দখলীয় পাহাড়ি ভূমি নিজের বলে দাবি করে চলেছে৷ ওইসব পাহাড়ে উত্পাদিত জুমের ফসল থেকেও তাকে চাঁদা দিতে হচ্ছে। গাছ কর্তনে বাধা ও চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় ইতোপূর্বে মুরুংরা মিথ্যা মামলা ও মারধরের শিকার হন। ইতোমধ্যে মুরুংদের সৃজিত বাগান থেকে শামশুল আলম ৩৩টি আম, ৩৯টি কাঁঠাল, ৫১টি সেগুন, ১০০টি গামারী গাছ, প্রায় ৩ হাজার বাঁশ কেটে নেয়৷ গত ২০০৫ সালে সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারুক আহমেদসরেজমিন পরিদর্শন করে ওইসব ভূমি মুরুংদের ভোগ দখলে চিহ্নিত করে দেন৷ তারপরও শামশুর অত্যাচার-নির্যাতন থেকে মুরুংরা রেহায় পাচ্ছে না। চলতি মাসের শুরুতে পাক্কাই মুরুং কার্বারী ও তার ছেলে চাচিং মুরুং সওদা করতে রেপারপাড়ি বাজারে গেলে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় শামশুল আলম৷ এ সময় শামশুর পাথরের আঘাতে চাচিং মুরুং গুরুতর জখম হলে তাকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিত্সা দেয়া হয়। এ ঘটনায় একটি মামলাও হয়েছে।
স্মারকলিপিতে আরো অভিযোগ করা হয় ২০টি মুরুং পরিবারের ভোগ দখলীয় পাহাড়ি ভূমিতে একটি এনজিও দ্বারা সৃজন করে দেয়া সেগুন, গামারী, আম, কাঁঠালসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ ও বনজ বাগান থেকে বর্তমানে গাছপালা কেটে নিচ্ছে শামশুল আলম৷ বাগানে উত্পাদিত ফলগুলিও চুরি করা হচ্ছে৷ তার এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ইতোপূর্বে পাড়ার ১২ জন মুরুং গ্রামবাসীকে বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়। এছাড়াও বিভিন্ন সময় স্থানীয় প্রশাসনে মুরুংদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে। মুরুংদের কেয়াংঘর দখল করে নিজের বাড়ি বানিয়েছে। চলাচল পথ রুদ্ধ করে মুরুংদের চলাচলে বিঘ্নতা সৃষ্টি করছে। এসবের প্রতিবাদ করায় পুংপ্রে মুরুং এর খামার ঘরটি গুঁড়িয়ে শামশুল আলম৷ শামশুর এ সকল অত্যাচার-নির্যাতন থেকে রক্ষা না পেলে মুরুংরা শত বছরের ভোগ দখলীয় পাড়া ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যেতে হবে মর্মে আশংকা প্রকাশ করেন।
সূত্র: http://www.suprobhatbangladesh.com/index.php?news_id=50811&psh=_news_details.php