মেজর আতিকই পিসিপি নেতা-কর্মীর উপর নির্যাতন চালিয়েছে
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি।। পোস্টার লাগাতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার পিসিপি নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করেছেন, খাগড়াছড়ি ব্রিগেডের মেজর আতিকই ক্যান্টনমেন্টে তাদের উপর শারীরিক নির্যাতন চালান।
তারা বলেন খাগড়াছড়ি কলেজ গেটে সেনাবাহিনীর দু’টি গাড়ি এসে তাদেরকে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যায়। তারপর সেখানে তাদেরকে লাইনে দাঁড় করিয়ে প্রত্যেকের ছবি তোলা হয় ও চোখ বেঁধে দেয়া হয়।
এরপর তাদের উপর অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। মেজর আতিকই তাদের উপর প্রথমে আঘাত করেন বলে নির্যাতনের শিকার পিসিপির এক সদস্য সিএইচটি নিউজ ডটকমকের কাছে অভিযোগ করেন।
তাদেরকে সেখানে (ক্যান্টনমেন্টে) নেয়ার পর আর্মিরা কেউ সিভিল ড্রেস পরে কেউ সামরিক পোষাক পরা অবস্থায় তাদের দেখার জন্য ঘিরে ধরে। এ সময় মেজর আতিক তাদের উদ্দেশ্য করে বলেন ‘আমরা কি নাটক করছি নাকি এভাবে দেখছ?’
আর্মিরা মারধর করার পর সারা রাত তাদেরকে ঘুমাতে দেয়নি। কেউ ঘুমিয়ে পড়লে তাকে জাগিয়ে তোলে শাস্তি দেয়। একজন আর্মি প্রতিপনকে মধ্যরাতে গান গাইতে বাধ্য করে।
এছাড়া তাদেরকে ক্রস ফায়ারে অথবা আলুটিলা থেকে ফেলে দিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয় বলে তারা বলেন।
রাতে তাদেরকে কেবল বিস্কুট ও পানি দেয়া হয়। সকালে তাদেরকে চোখ বেঁধে দিয়ে থানায় নেয়া হলে সেখানে এক ম্যাজিষ্ট্রেট তাদের প্রতি জনের কাছ থেকে ৫,০০০ টাকা ‘জরিমানা’ আদায় করে ছেড়ে দেন।
পিসিপির এক কেন্দ্রীয় নেতা এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বাঙালি ছাত্র পরিষদ ও আর্মিরা যা করেছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়, চরম অগণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকার পরিপন্থী; কোন সভ্য মানুষ তা মেনে নিতে পারে না। যদি পিসিপির ওই পাঁচ সদস্য কোন অপরাধ করে থাকতেন তাহলে তার জন্য আইন আদালত রয়েছে। পোস্টারিং করার জন্য তাদের উপর এমন অমানুষিক নির্যাতন কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।’
তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ‘তাদের হাতে অস্ত্র ও ক্ষমতা আছে বলেই কী তারা যা ইচ্ছা তাই করতে পারে? যাকে খুশী তাকে মারধর করতে পারে? তারা কি আইনের উর্ধ্বে?’
জানা যায়, এ মেজর আতিকই খাগড়াছড়িতে তথাকথিত অপারেশনে নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। ইতিপূর্বেও তিনি অনেককে বিনা কারণে মারধর করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি সকল জাতিসত্তার মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা চালুর দাবিতে পিসিপি খাগড়াছড়ি কলেজ শাখার আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল শেষে ফেরার পথে মিছিলে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন কলেজ ছাত্রকে আটকিয়ে মেজর আতিক মাতৃভাষায় শিক্ষার দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ছিঁড়ে দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য গত বুধবার রাতে ইউপিডিএফ সংগঠক মিঠুন চাকমার মুক্তির দাবিতে পোস্টার লাগাতে গিয়ে খাগড়াছড়ির সরকারি কলেজ ক্যাম্পাস এলাকায় বাঙালি ছাত্র পরিষদ নামধারী সন্ত্রাসীরা পিসিপি’র ৫ নেতা-কর্মীকে লোহার রড ও লাঠিসোটা দিয়ে মারধর করে। এরপর তাদেরকে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
>> খাগড়াছড়িতে পিসিপি’র ৫ নেতা-কর্মীর উপর সেটলারদের হামলা-মারধর, সেনা হেফাজতেও ব্যাপক নির্যাতন
——————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।