রমেল চাকমার হত্যাকারী সেনাদের শাস্তির দাবিতে ঢাকায় পিসিপির বিক্ষোভ সমাবেশ      

0

Dhaka2

ঢাকা: রাঙামাটির নান্যাচরে এইচএসসি পরীক্ষার্থী পিসিপি নেতা রমেল চাকমা হত্যাকারী নান্যাচর জোন কমান্ডার বাহালুল আলম, মেজর তানভীরসহ দোষী সেনাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)।

শুক্রবার (২১ এপ্রিল) বিকাল ৪ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে পিসিপি ঢাকা শাখার সভাপতি রোনাল চাকমার সভপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেিটক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) এর ঢাকা অঞ্চলের সংগঠক মিল্টন চাকমা,পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি বিনয়ন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক বরুণ চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক নীতিশোভা চাকমা এবং সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাতীয় মুক্তি কাুউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, ছাত্র গণমঞ্চের সভাপতি সাঈদ বিলাস, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ ৷ এছাড়া সমাবেশে সংহতি জানান ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি সৈকত মল্লিক ৷ সমাবেশ পরিচালনা করেন ঢাকা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন চাকমা।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, রমেল চাকমা হত্যাকাণ্ড ঘটনাটি পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের ওপর শাসকগোষ্ঠীর ধারাবাহিক দমনপীড়নের অংশ হিসেবে ঘটেছে, যা পূর্বের বহু বর্বরতাকে হার মানিয়েছে৷ এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা সৃষ্টিকারী সেনা সদস্যদের প্রতি তীব্র নিন্দা এবং তাদের কৃতকর্মের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বক্তারা৷                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                     ফয়জুল হাকিম তাঁর বক্তব্যের শুরুতে রমেল চাকমাকে পিটিয়ে হত্যা করাকে তীব্র নিন্দা  জানান ৷ এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সেনাদের শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন,  দোষীদের গ্রেফতারপূর্বক বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে ৷ তিনি আরো বলেন, বিরোধী মত দমন করার জন্য হত্যা-গুম করা হচ্ছে ৷ সরকারের ফ্যাসিবাদ রুখতে পাহাড় ও সমতলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য আহ্বান জানান তিনি৷

Dhaka1

ছাত্র গণমঞ্চের সভাপতি সাঈদ বিলাস বলেন, অন্যায়ভাবে তুলে নিয়ে হত্যা করা খুবই ন্যক্কারজনক ৷ সেনা কর্তৃক হত্যা  এবং লাশ ছিনিয়ে নেয়া ও পুড়িয়ে ফেলাকে তিনি তীব্র নিন্দা জানান ৷ তিনি আরো বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ১১ নির্দেশনার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণকে দমনপীড়ন করা হচ্ছে ৷ তিনি পাহাড় হতে সেনা শাসন তুলে নেওয়ার দাবি জানান।

ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ বলেন, সেনারা হত্যাও করবে আবার সামাজিক রীতি নীতি তোয়ক্কা না করে লাশ ছিনিয়ে পুড়িয়ে ফেলে। এটা চরম বর্বর আচরণ ছাড়া কিছুই নয়  ৷ তিনি বলেন, পাকিস্তান সময়ে যেমনি  নির্যাতন করা হত, তেমনি বর্তমানে পাহাড়ে পাকবাহিনীর মত রাষ্টীয় বাহিনী নির্যাতন চালাচ্ছে ৷

পিসিপি সভাপতি বিনয়ন চাকমা বলেন, সেনারা রমেল  চাকমাকে হত্যা করে ক্ষান্ত হয় নি, তার লাশ নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে ৷লাশ ছিনিয়ে নিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে ৷ লাশটাও ছিনতাই হওয়া – এর চেয়ে দুঃখ বেদনা আর কী হতে পারে নিহতের পরিবারের জন্য ৷তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,  নিজেরা লাশ পুড়ে ফেলে সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি-নীতির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছে সেনারা।

ইউপিডিএফ সংগঠক মিল্টন চাকমা বলেন, পাকিস্তানী প্রেতাত্মারা পার্বত্য চট্টগ্রামে জুলুম চালাচ্ছে৷ লাশ বেওয়ারিশ না হলে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং এটাই নিয়ম ৷ জঙ্গীদের লাশ পর্যন্ত পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় ৷ কিন্তু সেনারা নিজেদের হাতে নিহত রমেল চাকমার লাশ ছিনিয়ে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলেছে এর চেয়ে কী আর মানবিক কাজ হতে পারে ! তিনি আরো বলেন হত্যা করে, নির্যাতন করে ইউপিডিএফের ন্যায্য পূর্ণস্বায়ত্বশাসন আন্দোলনকে স্তব্দ করা যাবে না।

সমাবেশ শেষ হওয়ার পর মিছিল বের করা হয়৷ মিছিলটি প্রেসক্লাব থেকে তোপখানা  রোডে এসে শেষ হয়।
————–
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।  

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More