বিলাইছড়িতে দুই মারমা মেয়েকে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে

রাঙামাটিতে এইচডব্লিউএফ’র ডাকে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক ও নৌপথ অবরোধ পালিত, আটক ৩

0

রাঙামাটি : বিলাইছড়িতে মারমা সম্প্রদায়ের দুই বোনকে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশপূর্বক ঘটনায় জড়িত সেনা জওয়ানের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিসহ ৬ দফা দাবিতে আজ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, শনিবার রাঙামাটিতে হিল উইমেন্স ফেডারেশন(এইচডব্লিউএফ)-এর ডাকে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি স্বতঃস্ফুর্ত ও সফলভাবে পালিত হয়েছে। জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন এই অবরোধের প্রতি সমর্থন জানায়। তবে রাঙামাটি শহর এলাকা অবরোধে আওতামুক্ত রাখা হয়।

অবরোধ চলাকালে বিকাল ৪:৩০টার দিকে ঘিলাছড়ি ইউপি’র ভুইয়ো আদাম এলাকা থেকে সেনাবাহিনী ৩ ব্যক্তিকে আটক করেছে। এরা হলেন- এডিশন চাকমা (২৯), অনিল বিকাশ চাকমা (৩৮) ও সুখময় চাকমা (২২)। এছাড়া দুপুরে একই ইউনিয়নের নাঙেল পাড়ায় দুই পাহাড়ি যুবককে মারধর করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

রাঙামাটি শহর এলাকা অবরোধ আওতামুক্ত থাকলেও কাউখালী, নান্যাচর, বাঘাইছড়িসহ বিভিন্ন উপজেলায় স্বতঃস্ফুর্তভাবে অবরোধ পালিত হয়। সকালে বিভিন্ন জায়গায় অবরোধের সমর্থনে পিকেটাররা রাস্তায় টায়ার জ্বালায়।

এদিকে অবরোধকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে কুদুকছড়ি এলাকা, বেতছড়ি ও কাউখালীতে সেনাবাহিনীর নজিরবিহীন টহল ছিল।

হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিরূপা চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক মন্টি চাকমা এক বিবৃতিতে অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে সহযোগীতা প্রদানের জন্য সকল যানবাহন মালিক, চালক, শ্রমিক সংগঠন ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, বিলাইছড়িতে দুই বোনকে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ঘটনা ধামাচাপা দিতে নানা টালবাহানা চলছে। ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ না করে ধর্ষণের শিকার দুই বোনকে এখনো অমানবিকভাবে হাসপাতালে আটকে রাখা হয়েছে।

নেতৃদ্বয় অবিলম্বে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ঘটনার ডাক্তারি পরীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশপূর্বক ঘটনায় জড়িত নিরাপত্তাবাহিনীর জওয়ানদের গ্রেফতার করে আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করাসহ ৬ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানান।

দাবিগুলোর মধ্যে আরো রয়েছে, ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার দুই বোনকে সামাজিকভাবে পুনর্বাসনের উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া; ধর্ষণ-নির্যাতনের শিকার মেয়েদের অভিভাবকদের ওপর থেকে নজরদারি ও চলাফেরার নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে তাদের বন্দীদশা থেকে মুক্ত করে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে দেয়া; সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন রাঙ্গামাটির বর্তমান জেলা প্রশাসককে প্রত্যাহার করে একজন যোগ্য প্রশাসক সেখানে নিয়োগ; সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন ও পুলিশ সংস্থায় সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োগের ব্যাপারে আরও সর্তকতা অবলম্বন করা এবং ফারুয়া সেনা ক্যাম্প-এ দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাসহ ২১ জানুয়ারি অরাছড়ি পাড়ায় অভিযান চালানো সেনা জওয়ানদের প্রত্যাহার করা।

এছাড়া তারা ভুইয়ো আদাম থেকে আটক ৩ ব্যক্তিকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ২১ জানুয়ারি দিবাগত রাত ১:৩০টার সময় বিলাইছড়ি ফারুয়া ক্যাম্প থেকে মিজানের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য অরাছড়ি গ্রামে অভিযানে গিয়ে তল্লাশির নামের বাড়িতে ঢুকে একই পরিবাররের বড় বোনকে ধর্ষণ ও ছোট বোনকে যৌন নিপীড়ন করে।
—————
সিএইচটিনিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More