রাঙামাটি প্রতিনিধি
সিএইচটিনিউজ.কম
রাঙামাটি শহরের উপকণ্ঠ রাঙাপান্যা এখন যেন এক বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ মাটি খুড়লেই মরা মানুষের হাড়গোড় পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া অনেক সময় পার্শ্ববর্তী জঙ্গলাকীর্ণ এলাকায় বড় বড় গর্ত চাপা দেয়ার মতো খোড়া নতুন মাটি দেখা যায়। এগুলো খুনের পর মৃতদের মাটি-চাপা দেয়ার চিহ্ন বলে এলাকাবাসীর ধারণা।
নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাঙাপান্যার এক বাসিন্দা বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আমরা আনারস বাগানে কাজ করছিলাম। এমন সময় দেখি একদল যুবক একজনকে মারতে মারতে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমার ধারণা তাকে খুন করে মাটি চাপা দেয়া হয়েছে।’
এভাবে গত কয়েক বছরে অনেককে এভাবে নিয়ে যেতে দেখা গেছে বলে তিনি জানান। তার ধারণা, আওয়ামী লীগ নেতা অনিল চাকমাসহ ইউপিডিএফের কর্মী সমর্থকদেরকে ধরে এনে খুন করে এখানে কবর দেয়া হয়েছে।
গত বছর রাঙামাটি শহর থেকে হিল উইমেন্স ফডারেশনের ১৪ নেতাকর্মীকে অপহরণ করে এদিকে নেয়া হয়েছিল বলে এলাকাবাসী জানান। পরে অবশ্য প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও জনগণের ব্যাপক চাপের মুখে অপহরণকারী সন্তু গ্রুপের সদস্যরা তাদেরকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।
রাঙাপান্যা এলাকায় বসবাসরত এক সরকারী কর্মকর্তার মতে, আমছড়ির পূর্বে এবং রেডিও অফিস থেকে রাঙাপান্যা পর্যন্ত বিশাল এলাকায় যা চলছে তাকে অরাজকতা ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না।
তিনি বলেন, ‘রাঙাপান্যা এলাকায় জেএসএস(সন্তু গ্রুপ) এর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় একজনের জমি অন্য জনে কেড়ে নেয়ার মহোৎসব চলছে। এক দল লোক নিজেদেরকে জেএসএস কর্মী পরিচয় দিয়ে এ সব করছে। ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। আজ যদি তারা আমার জমি, ঘরের ভিটা কেড়ে নেয় তাহলেও আমার কিছুই করার থাকবে না।’
তিনি বলেন, স্থানীয় সাংবাদিক বা অন্য কাউকে এ সব কথা বলা যায় না। কারণ তথ্যদাতার নাম ফাঁস হলেই বিপদ। সন্তুর লোকজন জানে শেষ করে দেবে।
এলাকাবাসী এর প্রতিকার চায়, তবে অভিযোগ করতে ভয় পায় বলে তিনি জানান। তিনি এলাকাবাসীর পক্ষে সিএইচটি নিউজ বাংলার মাধ্যমে এ বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।