রাঙামাটি জেলে বন্দী রাখাইন ভিক্ষুর কি জামিন হবে না?
ডেস্ক রিপোর্ট ॥ চান্দবাসা নামে ৬৮ বছর বয়সী এক রাখাইন ভিক্ষু রাঙামাটি কারাগারে গত এক বছর ধরে বন্দী রয়েছেন। তাকে গত বছর ২০ আগষ্ট রাঙামাটি শহর থেকে বিদেশী মুদ্রা রাখার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।
তার বিরুদ্ধে “১৯৪৬ সালের বৈদেশিক নাগরিক সম্পর্কিত আইনের ১৪ ধারা ও ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (ঘ) (১) (খ) ধারায়” মামলা দেয়া হয়েছে। মামলা নং ১৪/তাং ২০/৮/২০১৬। (জি আর ৩১০/১৬ কোতয়ালী থানা)।
জানা যায়, ভিক্ষু চান্দবাসার আদি নিবাস আরাকানের ছাংগুলেই-এ অবস্থিত দামাই সাক্যা ধর্মচক্র মন্দিরে। ভিক্ষু হওয়ার আগে তার গৃহী নাম ছিল উথোয়েনচিং রাখাইন। পিতার নাম মৃত থৈ লাউ রাখাইন। তিনি গ্রেফতারের আগে পর্যন্ত রাঙামাটির বালুখালি বৌদ্ধ বিহারে ৮ বছর ধরে বসবাস করছিলেন।
বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু হিসেবে কারা কর্তৃপক্ষ তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং তবে ধ্যান সাধনা ও ধর্ম চর্চা করতে বেশ অসুবিধা হচ্ছে বলে জেল থেকে সদ্য ছাড়া পাওয়া এক ব্যক্তি সিএইচটি নিউজ ডটকমকে জানান।
তিনি বলেন, “তবে ভান্তে (ভিক্ষু) সব সময় মনমরা করে থাকেন, কারণ এখানে তার কেউ নেই বলে তাকে কেউ দেখতে আসে না এবং জামিনে মুক্ত হওয়ার ব্যাপারেও তিনি নিরাশায় ভোগেন।
প্রথম দিকে বালুখালিবাসীরা তাকে জেলে দেখতে যেতেন, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তারাও আর যাচ্ছেন না। বাঘাইছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান বড়ঋষি চাকমা জেলে থাকার সময় আশ্বাস দিয়েছিলেন, তিনি ছাড়া পেলে ভান্তেকে জামিনে মুক্ত করার ব্যাপারে চেষ্টা চালাবেন। কিন্তু অনেক আগে তিনি জেল থেকে বের হলেও ভান্তের জামিনের ব্যাপারে কিছুই করেননি।
মায়ানমারের বহু নাগরিক ইতিপূর্বে বাংলাদেশে গ্রেফতার হয়েছিলেন এবং জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন। এমনকি রাখাইন প্রদেশের সশস্ত্র বিদ্রোহী দলের নেতা পর্যন্ত গ্রেফতারের পর ছাড়া পান।
তাই অনেকের প্রশ্ন, ধর্মীয় পুরোহিত হয়েও কেন চান্দাবাসা ভিক্ষুকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। অন্য কোন কারণে না হলেও অন্তত: বয়স ও ধর্মীয় দিক বিবেচনায় এই সংসার ত্যাগী ভিক্ষুকে অবিলম্বে জামিনে মুক্তি দেয়া উচিত বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সাথে রাখাইন প্রদেশের ধর্মীয় যোগাযোগ শত শত বছরের পুরোনো। এক সময় পার্বত্য অঞ্চলে মায়ানমারের ভিক্ষুদের বেশ প্রাধান্য ছিল। গত ৬০-৭০ দশকে স্থানীয় চাকমা ও মারমাদের মধ্য থেকে ভিক্ষু হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় তাদের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যায়। তারপরও রাখাইন প্রদেশ থেকে ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামে আসা বৌদ্ধ ভিক্ষুর সংখ্যা নেহাত কম নয়।
—————
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।