লক্ষীছড়িতে পার্বত্য চট্টগ্রামে দুর্দশার পেছনে ব্রিটিশ শাসনের ভুমিকা শীর্ষক আলোচনা সভা
লক্ষীছড়ি : “পার্বত্য চট্টগ্রামের অতীত ও বর্তমান দুর্দশার পেছনে ব্রিটিশ সাম্ম্রজ্যবাদী শাসনের ভূমিকা এবং বর্তমান প্রজন্মের করণীয়” শীষর্ক এক আলোচনা সভা শুক্রবার( ১৮ আগষ্ট, ২০১৭) লক্ষীছড়ি উপজেলাস্থ কুদুকছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ইতিহাস অনুসন্ধানী গবেষণা সেল’ এর ব্যানারে উক্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ লক্ষীছড়ি থানা শাখার সাধারণ সম্পাদম মেনসন চাকমা। সভায় মূল আলোচক হিসেবে আলোচ্য বিষয়বস্তু নিয়ে আলচনা করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম কেন্দ্রীয় সভাপতি অংগ্য মারমা। এছাড়া আরো আলোচনা করেন পিসিপি কেন্দ্রীয় সদস্য হ্লাচিংমং মারমা, ৩ নং ওয়ার্ড মেম্বার পাইচি মং মারমা, জাতিসত্তা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের সদস্য বিনোদ মুন্ডা, পিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক সমর চাকমা। সভা পরিচালনা করেন নয়ন চাকমা।
সভায় অংগ্য মারমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম টানা ৭৫ বছর ধরে ব্রিটিশের পদানত হয়ে ছিল। এই সময়ে ব্রিটিশ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বকীয় সত্ত্বা ধ্বংস সাধনের জন্য নানা ধরণের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ জারি করেছিল। পার্বত্য চট্টগ্রামের অখন্ড সত্ত্বা মুছে ফেলে তিনটি সার্কেলে ভাগ করা হয়েছিল। তাছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি বৃহৎ অংশ আসামের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। ব্রিটিশরা পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বতন্ত্র শাসনব্যবস্থা ভেঙে দিয়ে ছিল।সামন্তীয় শাসকদের শ্রেণিগত সুবিধাবাদের সদ্ব্যবহার করে তারা পার্বত্য জনগণের উপর অতিরিক্ত কর বসিয়ে দিয়ে শোষণব্যবস্থা কায়েম করেছিল। এভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের বনজ সম্পদ ও জনগণের রক্তে ঘামে ফলানো ফসলের সিংভাগ তারা লুটে নেয়ার বিধিব্যবস্থা কায়েম করেছিল।
পার্বত্য চট্টগ্রামের ততকালীন নেতৃত্ব এই শোষণ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি।
তাছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ তখনো সচেতন ও অধিকারকামী হতে না পারায় প্রতি পদে পদে নানাভাবে পার্বত্যবাসীকে শোষণের যাঁতাকলে নিষ্পেষণ করা হয়েছিল।
তিনি বলেন আমাদের এটা মনে রাখতে হবে যে, ব্রিটিশ বেনিয়ারা পার্বত্যবাসীকে তাদের পুঁজিবৃদ্ধির উপায় হিসেবে ভেবেছিল। তারা যখন ভারতবর্ষ থেকে চলে যেতে বাধ্য হয়, তখনও তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের সার্বিক কল্যাণ ও মংগলের কথা চিন্তা করেনি। তারা পার্বত্যবাসীদের ন্যায্য দাবিকে ভুলুন্ঠিত করেছে।
অতীতের এই শোষণ বঞ্চনা নিষ্পেষণ অবহেলার ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষাগ্রহণ করা দরকার বলে তিনি মত প্রদান করেন।অতীতের এই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নিজেদের সক্ষমতা ও যোগ্যতার উপর আমাদের দাঁড়াতে হবে বলে তিনি সভায় জোর মত ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, আমাদের ইতিহাস সচেতন হতে হবে। আগে আমাদের নেতৃত্ব যে ভুল করেছেন, সে ধরণের ভুল যেন আমরা না করি সেদিকে সংগ্রামীদের খেয়াল রাখতে হবে।
—————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।