সংখ্যালঘু জাতির জনগণের ওপর হামলা, জমি দখল, ভিটে-মাটি থেকে উচ্ছেদ বন্ধের দাবি

0

সিএইচটিনিউজ.কম
IMG_20140630_170118ঢাকা: পাহাড় ও সমতলে সংখ্যালঘু জাতির জনগণের ওপর হামলা, জমি দখল, ভিটে-মাটি থেকে উচ্ছেদ বন্ধের দাবি জানিয়েছে জাতিসত্তা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ। ঐতিহাসিক সান্তাল “হুল” দিবস উপলক্ষে আজ ৩০ জুন সোমবার বিকাল ৪টায় ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুখে আয়োজিত এক সমাবেশ থেকে পরিষদের নেতৃবৃন্দ এ দাবি জানান।

“সংবিধানের বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল কর, জাতিসত্তার স্বীকৃতি দাও; সারাদেশে ভাষাগত ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও ভূমি বেদখল বন্ধ কর” এই দাবিতে জাতিসত্তা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ নেতা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি মাইকেল চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম, উর্দুভাষী আন্দোলনের জামিল আহমেদ, বাঙলাদেশ লেখক শিবিরের ফারুক আহমেদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নিরূপা চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা বিনয়ন চাকমা।

সমাবেশে মাইকেল চাকমা বলেন, ৩০ জুন ঐতিহাসিক “হুল” দিবস। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের শোষণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের দিন এবং একই সাথে বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বিভিন্ন জাতিসত্তার জনগণের সাংবিধানিকভাবে স্ব-স্ব জাতীয়তা কেড়ে নিয়ে বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দেয়ার দিন। জাতিসত্তা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ এই দিনে সরকারের কাছে দাবি জানায়- অবিলম্বে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে জাতিসত্তাসমূহের স্বীকৃতি দিতে হবে। পাহাড় ও সমতলে সংখ্যলঘু জাতির জনগণের ওপর হামলা, জমিদখল, ভিটে-মাটি থেকে উচ্ছেদ বন্ধ করতে হবে।

ফয়জুল হাকিম বলেন, ১৪ জুন ঢাকার মিরপুর কালশী কুর্মিটোলা উদুভাষী বিহারী ক্যাম্পে আগুন জ্বালিয়ে ৯ জনকে ও গুলি করে টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে ২ জনকে হত্যার জন্য দায়ী কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। সরকার পুলিশ খুনীদের আশ্রয় দিয়ে চলছে। ফয়জুল হাকিম হুল দিবসের শক্তি নিয়ে আহ্বান জানিয়ে বলেন- এসব হত্যার বিচারের দাবীতে ঢাকায় সারাদেশ থেকে জাতিসত্তার জনগণকে সমবেত করতে হবে।

ফারুক আহমেদ বলেন, শোষক শাসক শ্রেণীর সরকার ইতিহাসকে ভয় পায়। কেননা জনগণ হচ্ছে ইতিহাসের নায়ক। ৩০ জুন ১৮৫৫ সালে “হুল” বিদ্রোহের ইতিহাস তাই পাঠ্যসূচীতে নেই।

উর্দুভাষী নেতা জামিল আহমেদ বলেন, কালশী হত্যার খুনীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।IMG_20140630_171128

হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভানেত্রী নিরূপা চাকমা বলেন, দীঘিনালা ১০ জুন পাহাড়ি জনগণের নারীদের উপর বিজিবি সদস্যরা হামলা চালিয়েছে। তাদের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করেছে।

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ নেতা বিনয়ন চাকমা বলেন, সিধহু-কানুহু-চাঁদ-ভৈরব শিখিয়েছে সংগ্রাম করে বাঁচতে হবে।

সমাবেশ শেষে মিছিল সহকারে প্রেসক্লাব থেকে পল্টন মোড় ঘুরে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে হুল দিবসের কর্মসূচি শেষ হয়।

উল্লেখ্য, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ও তার এদেশীয় দালাল জমিদার মহাজনদের শোষণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে ১৮৫৫ সালের ৩০শে জুন ভারতে ভগনাডিহিতে সিধুহ-কানহু-চাঁদ-ভৈরবের নেতৃত্বে এক বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল। ভারতের বুকে জনগণের স্বাধীনতা সংগ্রামের এই দিনকে স্মরণ করে জাতিসত্তা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ এ সমাবেশের আয়োজন করে।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More