সংঘাত পরিহার করে চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলন শুরু করতে জেএসএস’র প্রতি আহ্বান

0

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি ।। ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের ধ্বংসাত্মক পথ ও রাজনীতি পরিহার করে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলন শুরু করতে জেএসএস-এর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পানছড়ি ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত প্রতিরোধ কমিটি।

আজ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ শনিবার পানছড়ি এলাকার বিশিষ্ট ব‍্যক্তিদের নিয়ে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধে জনগণের করণীয়’ শীর্ষক এক উন্মুক্ত আলোচনা সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্তক্রমে এ আহ্বান জানানো হয়।

আলোচনা সভায় এলাকার শতাধিক বিশিষ্ট মুরুব্বি উপস্থিত ছিলেন ।

সভায় ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক ও পানছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান শান্তি জীবন চাকমার সভাপতিত্বে ও সঞ্চয় চাকমার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনিল চাকমা। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিপ্লব কার্বারী, কংজারি পাড়ার অঙলা মার্মা, দেবমিত্র কার্বারী, মনিন্দ্র ত্রিপুরা, হেম রঞ্জন কার্বারী, সমর বিকাশ চাকমা, আম্রা মার্মা, নন্দ দুলাল চাকমা, কুলতা মুনি চাকমা, মহিল মেম্বার হীরা মতি ত্রিপুরা (বড়ুয়া) প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, আমরা শান্তি চাই। হানাহানি চাই না। আঞ্চলিক দলগুলোর মধ‍্যে ঐক্য হলে আমরা স্বাগত জানাবো।

এদিকে আলোচনা সভা চলাকালীন পানছড়ি শান্তিপুর-নালকাবা এলাকায় জেএসএস এম.এন লারমা-এর বাহিনী কর্তৃক ইউপিডিএফ’র পরিবার ও সমর্থকদের নিজ বাড়ি হতে জোরপূর্বক তাড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় বক্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে এর তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন।

পানছড়ি ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব প্রত্যুত্তর চাকমা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়ে উক্ত উন্মুক্ত আলোচনা সভায় সর্বসম্মতভাবে গৃহিত জেএসএস’র প্রতি আহ্বান সম্বলিত বক্তব্য তুলে ধরা হয়।

এতে বলা হয়, ‘চুক্তি বাস্তবায়ন হলো জেএসএস-এর প্রধান রাজনৈতিক কর্মসুচি। জেএসএস এম. এন. লারমা অংশের নেতারাও চুক্তি বাস্তবায়ন চান বলে দাবি করে থাকেন। অপরদিকে ইউপিডিএফ চুক্তির সমালোচনা সত্ত্বেও জাতি ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থের কথা বিবেচনা করে চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে সহযোগিতা দেয়ার প্রতিশ্রুতি বহু আগেই ঘোষণা করেছে; এমনকি গত ২৬ ডিসেম্বর তাদের পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রচারিত লিফলেটেও তারা তাদের এই অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে’।

চুক্তি বাস্তবায়ন কেন হচ্ছে না তা খুঁজে বের করা জরুরী উল্লেখ করে এতে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রী, এমপি ও অন্যান্য কর্মকর্তাগণ চুক্তি বাস্তবায়নে সরকার আন্তরিক বলে জনগণকে নিয়মিত স্মরণ করিয়ে দিয়ে থাকেন। এক কথায় সরকারসহ সকল পক্ষ চুক্তি বাস্তবায়নে আগ্রহী হওয়ার পরও কেন চুক্তি বাস্তবায়ন হচ্ছে না এবং এর জন্য কে বা কারা দায়ি তা খুঁজে বের করা এখন জরুরী হয়ে পড়েছে’।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা মনে করি জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি না খেলে চুক্তি বাস্তবায়ন যে দলটির প্রধান কর্মসুচি, সে দলটির কর্তব্য হলো উক্ত কর্মসুচি বাস্তবায়নে অন্য যেসব দল, সংগঠন ও ব্যক্তি সহায়তা দিতে আগ্রহী তাদেরকে সাথে নেয়া বা তাদের সাথে ঐক্য করা। কিন্তু জেএসএস সেটা না করে কেন ঐ দলগুলোর সাথে শত্রুতা করে সংঘাতে লিপ্ত হচ্ছে তা আমাদের বোধগম্য নয়’।

এতে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলা হয়, ‘আমরা পানছড়ি ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত প্রতিরোধ কমিটি তথা এলাকার সচেতন নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে জেএসএস-কে আশ্বস্ত করতে চাই যে, জেএসএস ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধ করে চুক্তি বাস্তবায়নের কর্মসূচি দিলে সবার আগে পানছড়ির আপামর জনগণকে সেই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণে কমিটি সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাবে বলে প্রতিশ্রুতি প্রদান করছি’।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সংঘাত বন্ধ করে চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলন শুরু করার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, ‘আমরা অবিলম্বে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের ধ্বংসাত্মক পথ ও রাজনীতি পরিহার করে ইউপিডিএফ ও জেএসএস এম. এন. লারমার সাথে ঐক্য গড়ে তুলে চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামব্যাপী গণ আন্দোলন শুরু করার জন্য জেএসএস নেতৃবৃন্দের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি’।

 


সিএইচটি নিউজে প্রকাশিত প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ,ভিডিও, কনটেন্ট ব্যবহার করতে হলে কপিরাইট আইন অনুসরণ করে ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More