সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বাবুছড়া পরিদর্শন
সিএইচটিনিউজ.কম
খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়িতে দু’দিনের সফররত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একটি প্রতিনিধি দল আজ ১৪ জুলাই সোমবার দীঘিনালার বাবুছড়ায় বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর স্থাপনের কারণে উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলোর সাথে সাক্ষাত ও ব্যাটালিয়ন স্থাপনের স্থান পরিদর্শন করেছেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর নেতৃত্বে ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের অন্যান্যরা হলেন-আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাসের আ্হ্বায়ক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল লতিফ এমপি, খাগড়াছড়ির সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, আদিবাসী বিষয়ক ককাসের সদস্য নাজমুল হক প্রধান এমপি, ইয়াছিন আলী এমপি ও আদিবাসী বিষয়ক ককাসের টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য জান্নাত-এ-ফেরদৌসী ও ফিরোজা বেগম চিনু এমপি ।
সোমবার দুপুর ১টায় খাগড়াছড়ি পৌঁছে জেলা প্রশাসকের সাথে বৈঠক শেষে বিকাল ৪টায় প্রতিনিধি দলটি বাবুছড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে তারা বাবুছড়া গিয়ে পৌঁছে। তাঁদের বাবুছড়া পরিদর্শনে যাওয়ার খবর পেয়ে এ সময় বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর স্থাপনের কারণে বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদ হয়ে বাবুছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া লোকজন রাস্তায় দাঁড়িয়ে তাঁদের অপেক্ষা করতে থাকে। সংসদীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বাবুছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে তাদের সাথে কথাবার্তা বলেন। উচ্ছেদকৃতরা তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা প্রতিনিধি দলকে জানান।
পরে নতুন চন্দ্র কার্বারী সহ ২১ জনের স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি প্রতিনিধি দলের নিকট পেশ করেন উচ্ছেদকৃত পাহাড়িরা। স্মারকলিপিতে তারা ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ সহ ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো: ১. জমির বেদখলদার বিজিবির ৫১ নং ব্যাটালিয়নের সদস্যদের অবিলম্বে প্রত্যাহার এবং জেলা প্রশাসনের অবৈধ জমি অধিগ্রহণ বাতিল করে আমাদের জমি ফিরিয়ে দেওয়া; ২. গত ১০ জুনের হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজিবি’র দেয়া মিথ্যা মামলা তুলে নেয়া, হামলার সাথে জড়িত বিজিবি, পুলিশ ও সেটলারদের গ্রেফতার করে আইন অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং হামলায় আহতদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া; ৩. বিজিবি’র দেয়া উক্ত মামলায় গ্রেফতারকৃতদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি ও হয়রানিমূলক দায়ের করা মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার করা; ৪. গ্রামে গ্রামে সেনা ও বিজিবির টহলের নামে জনগণের মধ্যে ভীতি ও আতঙ্ক ছড়ানো বন্ধ করা ও ৫. বিজিবি কর্তৃক উচ্ছেদ হওয়ার কারণে আমরা যারা আর্থিক ও মনস্তাত্ত্বিকভাবে ক্ষতির শিকার হয়েছে, তাদেরকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
এরপর প্রতিনিধি দলটি বিজিবি ব্যাটালিয়ন পরিদর্শন করেন এবং বিজিবি কর্মকর্তাদের সাথে কথাবার্তা বলেন। পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধি দলটি খাগড়াছড়ি ফিরে আসে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টায় প্রতিনিধি দলটি বিজিবি কমান্ডারদের সাথে পৃথক বৈঠক করবেন এবং সকাল ১০টায় খাগড়াছড়ি ব্রিগেড কমান্ডারের সাথে বৈঠকের পর সকাল ১১টায় চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে খাগড়াছড়ি ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
————-
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।