সরকার পাহাড়ি জনগণের ভালোমন্দের তোয়াক্কা করে না- সাজেকে পিসিপি-ডিওয়াইএফ এর কাউন্সিলে বক্তারা

0

সিএইচটিনিউজ.কম
SajekPCPDYFCommittee2014সাজেক: পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) ও গণতান্ত্রিক যুবফোরাম(ডিওয়াইএফ) সাজেক শাখার যৌথ কাউন্সিলের আলোচনা সভায় বক্তারা অভিযোগ করেছেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগণের ভালো মন্দের তোয়াক্কা করে না। একই সাথে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই। যদি থাকতো তবে সেনাশাসন জারি থাকতো না, সেনাবাহিনী বিজিবির প্রত্যক্ষ পরোক্ষ সহায়তায় ভুমি বেদখল করা হতো না।

’নিপীড়ন নির্যাতন ও ভুমি বেদখলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন’ এই শ্লোগানের উপর ভিত্তি করে আজ ১১ জুলাই ২০১৪, শুক্রবার সকালে রাঙামাটি জেলার সাজেকের উজো বাজারে অনুষ্ঠিত উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম সাজেক শাখার সভাপতি সুপন চাকমা। বক্তব্য রাখেন, ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) সাজেক ইউনিটের সমন্বয়ক মিঠুন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুবফোরাম খাগড়াছড়ি জেলা শাখার আহ্বায়ক জিকো ত্রিপুরা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্র্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সদস্য রিটন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুবফোরাম বাঘাইছড়ি থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় চাকমা, সাজেক ভুমিরক্ষা কমিটির সভাপতি জ্ঞানেন্দু চাকমা, সাজেক নারী সমাজের সভাপতি নিরুপা চাকমা প্রমুখ। এছাড়া সভায় উপস্থিত ছিলেন, গণতান্ত্রিক যুবফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য রিপন চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি বিপুল চাকমা, কেন্দ্রীয় সদস্য রতন চাকমা, বিলাস কার্বারী, হৃদয়রঞ্জন মেম্বার, চিত্তরঞ্জন কার্বারী, নির্মল কার্বারী, গঙ্গারাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিরুদ্ধ চাকমা প্রমুখ।

সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ডিওয়াইএফ সাজেক শাখার সহসভাপতি জেনেল চাকমা।

কাউন্সিল উপলক্ষে অনুষ্ঠিত উক্ত সভার প্রথমে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এ যাবৎ যারা শহীদ হয়েছেন তাদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। শোক প্রস্তাব পাঠ করেন চন্দ্রলক্ষী চাকমা।

সভায় বক্তারা বলেন, সরকার পার্বত্য জুম্ম জনগণকে সবদিক থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে জাতিসত্তার পরিচয় পর্যন্ত সরকার মুছে দিয়েছে। সরকার নানা উপায়ে জুম্ম ধ্বংসের নীলনক্সা কার্যকর করে যাচ্ছে। পার্বত্য জনগণ আজ চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক আন্তর্জাতিক কমিশনের প্রতিনিধিদের উপর রাঙামাটিতে হামলার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যারা পার্বত্য জুম্ম জনগণের পক্ষে কথা বলতে চায় তাদেরও নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখিন।

বক্তারা বলেন, সাজেক এলাকার জনগণ পুলিশ থানা স্থাপনে সম্মত ছিলো না। কিন্তু সরকার জনমতকে তোয়াক্কা না করে থানা স্থাপন করেছে। সাজেক এলাকায় পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন বিষয়ে বক্তারা বলেন, আমরা অধিকার হারা নিপীড়িত নির্যাতিত। আমাদের পর্যটনের আগে দরকার রাজনৈতিক অধিকার পূর্ণস্বায়ত্তশাসন। সাজেকের জুম্ম জনগণ ২০০৭-২০০৮ ও ২০১০ সালে ভূমি বেদখল ও নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়েছে। আন্দোলন সংগ্রাম করে সাজেকবাসী ভূমি বেদখল প্রতিরোধ করেছে। এখনো বিজিবি ক্যাম্প স্থাপনের নামে ভূমি বেদখলের প্রচেষ্টা চলছে উল্লেখ করে বলেন। ভূমি বেদখলের যেকোনো চক্রান্ত সাজেকের জনগণ প্রতিরোধ করবে বলে বক্তারা সমাবেশ থেকে  হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

আলোচনা সভা শেষে রিপন জ্যোতি চাকমাকে সভাপতি ও বেবিলন চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক করে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ সাজেক শাখার ১৫ সদস্যের নতুন কমিটি গঠনের ঘোষনা করেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য রিটন চাকমা। এছাড়া সুপন চাকমাকে সভাপতি ও অনুপম চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক করে ২১ সদস্যের গণতান্ত্রিক যুবফোরাম সাজেক শাখা কমিটি গঠনের ঘোষনা দেন গণতান্ত্রিক যুবফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য জিকো ত্রিপুরা।

সভা পরিচালনা করেন রিপনজ্যোতি চাকমা।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More