আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে

২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে পিসিপি

0

সিএইচটি নিউজ ডেস্ক : ২১শে ফেব্রুয়ারি মহান আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবানসহ বিভিন্ন জায়গায় পুষ্পস্তবক অর্পণ করে সকল ভাষা শহীদদের বিনম্র শ্রদ্ধা জানাবে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)।

PCP flag2পিসিপি‘র কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রোনাল চাকমা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয, ৫টি জাতিসত্তার ভাষায় (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও মুনিপুরী) প্রাক-প্রাথমিক যথেষ্ট শিক্ষা নয়, সকল জাতিসত্তার স্ব স্ব মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষাসহ পিসিপি‘র শিক্ষা সংক্রান্ত ৫দফা পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিকে সামনে রেখে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলায় প্রভাত ফেরীর মাধ্যেমে শহীদ মিনারে পুষ্প স্তবক অর্পণ করা হবে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসকে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ঘোষণা করলে ২০০০ সাল থেকে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ সকল জাতিসত্তার স্ব স্ব মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষাসহ শিক্ষা সংক্রান্ত ৫দফা দাবি নিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০২ সালে তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপমন্ত্রী মনি স্বপন দেওয়ান, ১৬ সেপ্টেম্বর তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী এসএম ওসমান ফারুক এবং ২০০৩ সালে তৎকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময় মিছিল, সভা-সমাবেশ, ক্লাশ বর্জন, স্কুল ধর্মঘটসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। এক পর্যায়ে ২০১০ সালে এসে দাবি আদায়ের জন্য ২১ শে ফেব্রুয়ারি আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা থেকে বিরত থাকার কর্মসূচি ঘোষণা দেয় পিসিপি।

একই দাবিতে ২০১১ সালে পিসিপি‘র ডাকে তিন পার্বত্য জেলায় স্কুল কলেজে ধর্মঘট সফলভাবে পালিত হয়। শিক্ষা মন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ পিসিপি‘র দাবিগুলো যৌক্তিক বলে মেনে নিয়ে ২০১৪ সালে সংখ্যালঘু জাতির ৬টি ভাষায় (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো, সান্তাল, মুনিপুরী) প্রাথমিক শিক্ষার চালুর ঘোষণা দিলেও তা বাস্তবায়ন না করায় ২০১৫ সালে খাগড়াছড়িতে মাতৃভাষায় প্রতীকী ক্লাশ ও ছাত্র সমাবেশ করা হয়। সর্বশেষ ২০১৬ সালে ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অভিমুখে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও শিক্ষা মন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়।

পিসিপি’র এই ধারাবাহিক আন্দোলনের ফলে সরকার ২০১৭ সালে ৫টি জাতিসত্তার (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও মুনিপুরী) ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক লেভেল পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম চালুর লক্ষ্যে বই প্রণয়ন করে। সরকারের এই কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়ে গত ২০১৬ সালের ২৪-২৫ আগস্ট দুই দিন ব্যাপী রাঙামাটিতে অনুষ্ঠিত পিসিপি’র ২০তম কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে ২০১০ সালে ঘোষিত শহীদ মিনারে পুষ্প স্তবক অর্পণ থেকে বিরত থাকার কর্মসূচী প্রত্যাহার করা হয় এবং ভাষা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদ মিনারে পুষ্প স্তবক অর্পণের কর্মসূচী ঘোষণা দেওয়া হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সরকার এ বছর ৫টি ভাষায় (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো, মুনিপুরী) প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা চালু করলেও যথেষ্ট অনিয়ম, অদক্ষতা লক্ষ্য করা গেছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ বই ছাপা হয়নি, শিক্ষকদের প্রস্ততিমূলক ট্রেনিং দেয়া হয়নি। এক কথায় সরকার দায়সারাভাবে কাজটা করেছে।

এদিকে পিসিপি’র খাগড়াছড়ি জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক সমর চাকমা স্বাক্ষরিত পৃথক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ২১ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়ি জেলা সদর ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহীদের শ্রদ্ধা নিবেদনের কথা জানানো হয়েছে।
——————-

সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More