বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীর বিচারে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

’৭১-এ হত্যাকাণ্ডের জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে হবে- পার্বত্য চট্টগ্রামের আট গণসংগঠন

0

সিএইচটি নিউজ ডটকম
পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে সক্রিয় আট গণসংগঠনের কনভেনিং কমিটি (গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, সাজেক নারী সমাজ, সাজেক ভূমি রক্ষা কমিটি, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি ও প্রতিরোধ সাংস্কৃতিক স্কোয়াড) আজ ২৩ নভেম্বর সোমবার সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক  যুক্ত বিবৃতিতে বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

Bibrityযুক্ত বিবৃতিতে আট সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, “১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের নিরস্ত্র জনগণের ওপর সশস্ত্র হামলা, বুদ্ধিজীবীসহ নির্বিচারে গণহত্যা ও ধর্ষণ সংঘটিত করার দায়ে পাকিস্তান রাষ্ট্র নিজেই বাংলাদেশের জনগণের নিকট অপরাধী হয়ে রয়েছে, তার দায় স্বীকার ও আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনা না করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ায় মতামত দেবার নৈতিক অধিকার পাকিস্তানের থাকতে পারে না।”

’৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে নিহত শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সন্তান ও পরিবার পরিজন, নির্যাতিত নারী তথা ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে সংহতি ও একাত্মতা জানিয়ে আট সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এও মন্তব্য করেছেন,“ স্বজন হারানো দুঃখ মর্মবেদনা কত গভীর, তা কেবল ভুক্তভোগীরাই বুঝতে পারে।”

নেতৃবৃন্দ নিজেদেরকে ভুক্তভোগী দাবি করে আরও বলেন, ‘বাঙালি জনগণের জীবনে’৭১-এর দুঃসহ কালো রাত্রি অতিক্রান্ত হয়েছে চার দশকের বেশী সময় হলো। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে দুঃখের রজনী এখনও শেষ হয় নি। হানাদার বাহিনীর স্টাইলে পার্বত্য চট্টগ্রামে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। নিরস্ত্র সাধারণ পাহাড়িদের হত্যা-খুন-গুম আর নারীদের ধর্ষণ এখনও অব্যাহত আছে। ’৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী হত্যা-ধর্ষণসহ জঘন্য অপরাধ সংঘটিত করলেও, ভূমি বেদখল করে নি। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের ভিন্ন ভাষা-ভাষী জাতিসত্তাসমূহের ওপর পরিচালিত দমন-পীড়ন পাক হানাদার বাহিনীর চাইতেও নির্মম আর ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। পাক হানাদার বাহিনী উর্দুভাষী বিহারী সম্প্রদায়ের একটি অংশকে বাঙালি জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছিল, অনুরূপভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামেও সেনাবাহিনী সেটলারদের “বিহারীদের” মত পাহাড়িদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে, সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়িয়ে পরিস্থিতি অসহনীয় করে তুলেছে। এ কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি ’৭১-এর চাইতেও অনেক দিক দিয়ে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে।”

‘পার্বত্য চট্টগ্রামে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সেনা কর্মকর্তাসহ তাদের দোসরদেরও একদিন বিচার হতে হবে বলে আট সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মন্তব্য করেছেন।’

যুক্ত বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন ডিওয়াইএফ-এর সভাপতি মাইকেল চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক অংগ্য মারমা, পিসিপি’র সভাপতি সিমন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন-এর সভাপতি নিরূপা চাকমা, পা.চ. নারী সংঘের সভাপতি সোনালী চাকমা, সাজেক নারী সমাজের সভানেত্রী নিরূপা চাকমা(২), সাজেক ভূমি রক্ষা কমিটির সভাপতি জ্ঞানেন্দু চাকমা, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভানেত্রী কাজলী ত্রিপুরা ও প্রতিরোধ সাংস্কৃতিক স্কোয়াডের সভাপতি আনন্দ প্রকাশ চাকমা।
—————
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More