অধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ গণসংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জাতিসত্তা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের
লিফলেটে আরো বলা হয়, সমগ্র উত্তর বঙ্গসহ সারা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু জাতিসত্তা ও আদিবাসীদের সর্বত্রই তাদের জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে এবং জাতিগত অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার মুখে। ২০১১ সালে ৩০শে জুন হুল দিবসেই সংবিধানের ১৫দশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু জাতিসত্তা ও আদিবাসীদের অস্তিত্ব পুরোপুরি অস্বীকার করে তাদের জাতিগত পরিচয় নির্ধারন করা হয়েছে ‘বাঙালি’ হিসেবে, বানানো হয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী; আমাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করা হয়েছে। হুল দিবসে এইভাবে সংবিধান সংশোধন করে শাসকগোষ্ঠী আমাদের চরমভাবে অপমানিত করেছে। এইভাবে স্থানীয় ও জাতীয় দুই দিক থেকেই আমরা অস্তিত্ব হারাতে চলেছি। এই অবস্থা থেকে আমাদের রক্ষা পাবার একটিই মাত্র পথ রয়েছে। সেই পথ হলো সংগঠন গড়ে তুলে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ এবং সংগ্রামের পথ। প্রতিবাদ-প্রতিরোধ-সংগ্রাম করেই আমাদের অধিকার আদায় করতে হবে, টিকে থাকতে হবে। সংগঠিত না থাকলে আমরা ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবো, হারাতে অনেক কিছু, সংগঠিত থাকলে আমাদের সব থাকবে।
* আদিবাসীদের জমি ক্রয় দেখিয়ে তৈরী করা সকল জাল ও বেনামী দলিল বাতিল করতে হবে। জাল ও বেনামী দলিলধারীদের শাস্তি দিতে হবে।
*আদিবাসীদের মালিকানার ‘শত্রু সম্পত্তি’ তাদের ওয়ারিশ অথবা আত্মীয়স্বজন অথবা স্ব-জাতির গ্রামবাসীদের হাতে ফেরৎ দিতে হবে।
*আদিবাসী পল্লী এলাকার খাস জমি ও পুকুর অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আদিবাসীদের লীজ ও পত্তন দিতে হবে। ক্স ১৯৫০ সালের প্রজাসত্ব আইনের ৯৭ ধারা যথাযথ ও কার্যকরভাবে প্রয়োগ করতে জমি বিক্রির ক্ষেত্রে আদিবাসীদের পূর্বানুমতি গ্রহণের জন্য পারগানা বাইসি এবং দিঘরী পরিষদকে দায়িত্ব দিতে হবে।
*সরকারি ভূমি কর্মকর্তা কর্তৃক হয়রানি ও দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। দুর্নীতিবাজ ভূমি কর্মকর্তাদের শাস্তি দিতে হবে।
*বনবিভাগের সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে প্রকৃত মালিকদের নিকট ভূমি ফেরৎ দিতে হবে।
*আদিবাসী ও সংখ্যালঘু জাতিসত্তা সমূহের ভূমি সংক্রান্ত ফৌজদারীও সিভিল মামলার সকল ব্যয়ভার সরকারিভাবে বহন এবং আইনী সহায়তা প্রদান করতে হবে।
*সকল মিথ্যা মামলা বন্ধ ও প্রত্যাহার করতে হবে। জুলুম নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।
*স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় সংখ্যালঘু জাতি ও আদিবাসীদের জন্য কোটা চালু করতে হবে। শিক্ষা ও চাকুরীক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করতে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এবং চাকুরী ক্ষেত্রে আদিবাসী কোটা চালু করতে হবে।
*বাংলাদেশের সকল আদিবাসী ও সংখ্যালঘু জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। ১৫দশ সংশোধনীসহ সংবিধানের সকল অগণতান্ত্রিক ধারা বাতিল করতে হবে।
এছাড়া লিফলেটে সান্তাল হুল দিবসের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসও তুলে ধরা হয়েছে।
লিফলেটে আগামীকাল ৩০ জুন নওগাঁর পত্নীতলায় নজিপুর পাবলিক মাঠে সান্তাল হুল দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে দলে দলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।