অবিরাম বর্ষণে ডুবে গেল লামা বাজার সহ পৌরসভার সংলগ্ন পাড়া, দুর্ভোগে জনজীবন

0

সিএইচটিনিউজ.কম
Lama-Flood-Photo-02উথোয়াই মারমা, লামা প্রতিনিধিঃ টানা ৪ দিনের বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে বান্দরবানের লামা পৌর এলাকাসহ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মাতামুহুরী নদী ও তার শাখা প্রশাখা এবং পাহাড়ি ঝিরি পানি বৃদ্ধি পেয়ে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে বিভিন্ন পেশাজীবির ২০ হাজার মানুষ। এছাড়া পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে ও পাহাড় ধসে আভ্যন্তরীন কয়েকটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

এ টানা বর্ষন অব্যাহত থাকলে এর চেয়েও ভয়াবহ বন্যাসহ পাহাড় ধ্বসের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। বৃহস্পতিবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মাতামহুরী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের গ্যাজ রিডার মো. আবু তৈয়ব জানিয়েছেন। এদিকে, প্রবল বর্ষণের ফলে উপজেলার বিভিন্ন স্থানের পাহাড় ধ্বসের আশঙ্কায় উপজেলা প্রশাসন, লামা পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ গুলোর পক্ষ থেকে মাইকিং করে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদেরকে নিরাপদে আশ্রয় নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, রবিবার দিনগত রাত থেকে মুষুলধারে প্রবল বর্ষণ শুরু হয়। আর এ টানা বর্ষণের ফলে সৃষ্ট পাহাড়ী ঢলে মাতামুহুরী নদীর পানি ফুঁসে উঠে গত বুধবার রাত নাগাদ লামা পৌর এলাকার নয়াপাড়া, বাসস্টেন্ড, টিএন্ডটি পাড়া, বাজারপাড়া, লামা বাজার, চেয়ারম্যান পাড়ার একাংশ, রাজবাড়ী, ছোট নুনারবিলপাড়া, বড় নুনারবিলপাড়া, উপজেলা পরিষদের আবাসিক কোয়ার্টার সমূহ, থানা এলাকা, চাম্পাতলী আনসার ব্যাটালিয়ান ক্যাম্প, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ইয়াংছা বাজারের কিছু অংশ, রুপসীপাড়া ইউনিয়নের দরদরী এলাকা প্লাবিত হয়। এতে কয়েকটি স্কুল, মাদ্রাসাও রয়েছে। অতি বৃষ্টির কারনে ধস দেখা দেয় বিভিন্ন ইউনিয়নে অবস্থিত পাহাড় গুলোতে।

লামা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতা সেলিম সওদাগর বলেন, ঢলের পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ব্যবসায়ী ও পরিবারগুলো তাদের মালামাল নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছেন। দ্রুত পানি বৃদ্ধির কারনে কেউ কেউ আবার ক্ষতির সম্মুখিন হয়।

লামা-আলীকদম-চকরিয়া বাস, জিপ ও পিকআপ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. হোসেন বাদশা জানান, লামা-আলীকদম সড়কের ক্যয়ারারঝিরিসহ উপজেলার অভ্যন্তরীন বিভিন্ন সড়কের ওপর পাহাড় ধ্বসে পড়ে ও ঢলের পানিতে ডুবে যাওয়ায় গাড়ি চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, অতি বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের কারণে লামা পৌর এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে চলতি মৌসুমের বীজতলা এবং বিভিন্ন ফসলাদি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে চাষীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। তবে কি পরিমান ফসল নষ্ট তা এখনো নিরুপন করা যায়নি।

পাহাড়ি ঢলে লামা পৌর এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে লামা উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইনু অং চৌধুরী জানিয়েছেন, উপজেলা পরিষদ এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছে। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
——————-

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More