আগামী ১০ জুন ভূমি কমিশনের অফিস ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম,খাদেমুলের কুশপুত্তলিকা দাহ
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
সিএইচটিনিউজ.কম
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের এক তরফা শুনানী কার্যক্রম বাতিল না করে আগামী ১০ ও ১১ জুন নতুন শুনানী তারিখ ধার্য করায় গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম আগামী ১০ জুন খাগড়াছড়িতে ভূমি কমিশনের অফিস ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এবং ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান খাদেমুল ইসলাম চৌধুরীর কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে। আজ ৩১ মে বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী এক সমাবেশ থেকে সংগঠনের নেতারা এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামে ভুমি কমিশনের এক তরফা শুনানী বাতিল ও প্রথাগত ভূমি অধিকারের স্বীকৃতির দাবিতে বিকাল সাড়ে ৩টায় খাগড়াছড়ি জেলা শহরের মহাজন পাড়া থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে চেঙ্গী স্কোয়ার ঘুরে উপজেলা পরিষদ হয়ে স্বনির্ভর বাজারে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল শেষে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি নতুন কুমার চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুমেন চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রীনা দেওয়ান। গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাইকেল চাকমা সমাবেশে উপস্থাপনা করেন।
সমাবেশ থেকে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি নতুন কুমার চাকমা আগামী ১০ জুন খাগড়াছড়িতে ভূমি কমিশনের অফিস ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ভূমি কমিশনের এক তরফা শুনানী কার্যক্রম বাতিল না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভূমি কমিশনের বিতর্কিত চেয়ারম্যান খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী পাহাড়ি জনগণের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ও দাবি-দাওয়াকে উপো করে অগণতান্ত্রিকভাবে এক তরফা শুনানী কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ এটা কিছুতেই হতে দেবে না বলে বক্তারা হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন।
বক্তারা বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়িদের উচ্ছেদের লক্ষ্যে নানা চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। ভূমি কমিশনের অগণতান্ত্রিক কার্যক্রমের মাধ্যমে সরকার স্বৈরাচারী এরশাদ ও জিয়াউর রহমানের শাসনামলে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়ে আসা বহিরাগত সেটলাররা যে হাজার হাজার একর জমি অবৈধভাবে দখল করেছে তার আইনগত বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করছে।
বক্তারা অবিলম্বে ভূমি কমিশনের এক তরফা শুনানী কার্যক্রম বাতিল করা ও ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান খাদেমুল ইসলাম চৌধুরীকে অপসারণ, পাহাড়িদের প্রথাগত ভূমি অধিকারের স্বীকৃতি এবং ভূমি কমিশন আইনের বিতর্কিত ও অগণতান্ত্রিক ধারা সংশোধন না করা পর্যন্ত কমিশনের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখা, বেদখলকৃত ভূমি ফিরিয়ে দেয়া, সেটলারদের দেয়া অবৈধ ভূমি বন্দোবস্তি বাতিল ও তাদেরকে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সমতলে সম্মানজনক পুনর্বাসনের দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে ভূমি কমিশনের চেয়ারমান খাদেমুল ইসলাম চৌধুরীর কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৩ ও ২৪ মে লাগাতার ৩৬ ঘন্টা সড়ক অবরোধ শেষে ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান খাদেমুল ইসলাম চৌধুরীকে পার্বত্য চট্টগ্রামে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয় এবং ৩০ মে‘র মধ্যে ভূমি কমিশনের এক তরফা শুনানী কার্যক্রম বাতিল করা না হলে আবারো কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারী উচ্চারণ সংগঠনের নেতারা। কিন্তু ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান খাদেমুল ইসলাম চৌধুরী নিদিষ্ট সময়সীমার মধ্যে এক তরফা শুনানী কার্যক্রম বাতিল না করে আগামী ১০ ও ১১ জুন আবারো শুনানীর তারিখ ধার্য করায় ভূমি কমিশন অফিস ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো।