‘আদিবাসী’ নিয়ে অহেতুক বিতর্ক বন্ধ করে সংখ্যালঘু জাতিসমূহের অধিকারের স্বীকৃতি দিন — ইউপিডিএফ
ডেস্ক রিপোর্ট
সিএইচটিনিউজ.কম
ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) সাধারণ সম্পাদক রবি শংকর চাকমা আজ ১১ আগষ্ট ২০১২ শনিবার এক বিবৃতিতে ‘আদিবাসী‘ শব্দটি নিয়ে অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টি না করে দেশের নিপীড়িত সংখ্যালঘু জাতিসমূহের অধিকারের স্বীকৃতি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সংখ্যালঘু জাতিসমূহকে চিরকাল অধিকার বঞ্চিত করে রাখার জন্য এবং তাদের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে বিভ্রান্ত ও দিকভ্রষ্ট করার জন্য ‘আদিবাসী‘ নিয়ে কৃত্রিম ও অনর্থক বিতর্কের জন্ম দেয়া হয়েছে। একটি জাতি নিজেদেরকে ‘উপজাতি‘, ‘আদিবাসী‘ ‘সংখ্যালঘু জাতি‘, ‘ক্ষুদ্রজাতি বা জাতিসত্তা‘, ‘জাতিগোষ্ঠী‘, ‘জনজাতি‘ যে নামেই অভিহিত করুক জাতিসংঘের দৃষ্টিতে তারা সবাই ইন্ডিজিনাস পিপল্স বা আদিবাসী। সুতরাং আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে দেশে আদিবাসী আছে কি নেই, সংখ্যালঘু জাতির জনগণ আদিবাসী নাকি অনাদিবাসী সে বিতর্ক অর্থহীন।‘
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে আবহমান কাল ধরে বসবাসরত বাঙালি-ভিন্ন অন্যান্য জাতিগুলোকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করা হয়েছে অভিযোগ করে ইউপিডিএফ নেতা বলেন, সরকারকে প্রথমেই স্বীকার করতে হবে যে এ দেশে বাঙালি ছাড়াও অন্যান্য জাতির অস্তিত্ব রয়েছে এবং তারপর সাংবিধানিকভাবে তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার, ভূমি অধিকার ও নিজস্ব সংস্কৃতির চর্চা, সংরক্ষণ ও বিকাশের অধিকার দিতে হবে। এই অধিকার দেয়ার ক্ষেত্রে ভিন্ন জাতিগুলো আদিবাসী নাকি অনাদিবাসী সে প্রশ্ন একেবারে অপ্রাসঙ্গিক।
সরকারের সমালোচনা করে রবি শংকর চাকমা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকার গঠনের আগে ‘আদিবাসী‘ নিয়ে মাতামাতি করলেও বর্তমানে যাদুকরের ভেনিসিং এগ (Vanishing egg) যাদুর মতো বই পুস্তক, দলিল দস্তাবেজ ও স্থাপনা থেকে ‘আদিবাসী‘ শব্দটি ‘ভেনিস‘ (Vanish) করে দিচ্ছে, যেন এর মাধ্যমে সংখ্যালঘু জাতিগুলোর অস্তিত্ব মুছে যাবে এবং তাদের জন্য আর অধিকারের ব্যবস্থা করতে হবে না।
তিনি সরকারকে এ ধরনের প্রতারণা, দ্বিমুখী নীতি ও কূট কৌশল পরিহার করে জাতিগত সমমর্যাদা ও সমঅধিকারের ভিত্তিতে সংখ্যালঘু জাতিসমূহের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা ও জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করে বিশ্ব সমাজে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার আহ্বান জানান।