আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নারী সমাবেশ

0

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিএইচটিনিউজ.কম
HWFprogram,khagrachari1আন্তর্জাতিক নারী দিবস ও ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের উদ্যোগে আজ ৮ মার্চ শনিবার খাগড়াছড়িতে এক নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

“নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন, জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে নারী সমাজ এগিয়ে আসুন” এই শ্লোগানে শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় খাগড়াছড়ি সদরের নারাঙহিয়া মাঠে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কণিকা দেওয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সভাপতি সোনালী চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য জিকো ত্রিপুরা ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি বিপুল চাকমা। হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রীনা দেওয়ান সমাবেশ পরিচালনা করেন।

সমাবেশে অংগ্য মারমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নারী নির্যাতন সহ সকল প্রকার নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন জোরদার করতে হবে। শুধুমাত্র একদিন মিছিল-মিটিঙ করলে অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নিরাপত্তা রক্ষিত হবে না। এজন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিনিয়ত লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।

তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি নারীদের নিরাপত্তা আজ চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। তারা খেতে-খামারে কাজ করতে গিয়ে, বাসে চড়তে গিয়ে, কুয়া থেকে পানি আনতে গিয়ে, জঙ্গল থেকে লাকড়ি সংগ্রহ করতে গিয়ে ধর্ষণ-নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কিন্তু জোরালো কোন প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে উঠছে না। তাই, এসব নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে নারীদেরকেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

HWFprogram, khagrachari3সোনালী চাকমা তার বক্তব্যে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে কোথাও না কোথাও নারী ধর্ষণ, নির্যাতনের ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটে চলেছে। কল্পনা চাকমার অপহরণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় এ ধরনের ঘটনা বার বার ঘটছে।

তিনি আরো বলেন, নারীরাই হচ্ছে সভ্যতার কারিগর। নারীদের অগ্রগতির মাধ্যমেই সমাজ অগ্রসর হতে পারে। তিনি বলেন, নারী অধিকার এমনিতেই প্রতিষ্ঠিত হবে না। এজন্য নারীদেরকে দক্ষতা, যোগ্যতা ও সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে নিজের মর্যাদা বাড়াতে হবে। তিনি সকল ক্ষেত্রে নারীদের শক্তিকে সুসংগঠিত করার আহ্বান জানান।

বিপুল চাকমা বলেন, প্রতিবছর নারী দিবস পালন করা হলেও নারীদের নিরাপত্তা বিধান, তাদের সম্মান-মর্যাদা-অধিকার রক্ষায় প্রয়োজনীয় তেমন উদ্যোগ নেয়া হয় না। অতি সম্প্রতি কমলছড়ি, মাটিরাংগাসহ গতকাল মানিকছড়িতে এক মারমা তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনা তারই উজ্জ্বল প্রমাণ। কিন্তু এসব নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত অপরাধীরা বরাবরই পার পেয়ে যায়। এসব অপরাধীদের বাঁচাতে একটি মহল তৎপর হয়ে উঠে, নানা ষড়যন্ত্র চালায়। পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরাপত্তার নামে যারা নিয়োজিত রয়েছেন তারাই এখানে ভক্ষকের ভূমিকা পালন করে থাকে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তিনি সবাইকে সচেতন হয়ে সকল অন্যায়-নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

এছাড়া বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ সারা দেশে নারীদের জীবনের নিরাপত্তা বিধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান এবং গতকাল (৭মার্চ) মানিকছড়িতে মারমা তরুণীকে ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করেন।

সমাবেশ শেষে নারাঙহিয়া মাঠ থেকে একটি র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি উপজেলা পরিষদ, চেঙ্গী স্কোয়ার হয়ে শাপলা চত্বর ঘুরে আবার নারাঙহিয়া মাঠে এসে শেষ হয়।

 

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More