ফিরে দেখা ২০১৫

ইউপিডিএফের উপর ব্যাপক রাজনৈতিক দমন-পীড়ন

0

সিএইচটি নিউজ ডটকম
ডেস্ক রিপোর্ট।। ২০১৫ সাল জুড়েই ব্যাপক রাজনৈতিক দমন-পীড়নের শিকার হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলনরত রাজনৈতিক দল ইউনাইটেডি পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)। গ্রেফতার, হয়রানি ছাড়াও গণতান্ত্রিক সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং আয়োজনে ব্যাপক বাধার সম্মুখীন হয়েছে দলটি।

Fire deka copyইউপিডিএফ ও নিজস্ব সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ২০১৫ সালের জানুয়ারি হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সেনাবাহিনী ও পুলিশ কর্তৃক ইউপিডিএফ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী সমর্থক, ছাত্র ও নিরীহ লোকজনসহ কমপক্ষে ১৪৩ জনকে আটক করা হয়। বেশিরভাগ আটকের ঘটনা ঘটে সেনাবাহিনী কর্তৃক। আটককৃতদের মধ্যে স্কুল-কলজের ছাত্র-ছাত্রীও রয়েছেন। অবশ্য এর মধ্যে অনেককে আটকের পর ছেড়ে দেওয়া হয়। অনেকে জেল থেকে জামিনে ছাড়া পান।

বর্তমানে ইউপিডিএফ নেতা দেবদন্ত ত্রিপুরা, প্রতীম চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম নেতা জিকো ত্রিপুরা, পিসিপি নেতা নিকাশ চাকমাসহ আরো বেশ ক’জন জেলে অন্তরীণ রয়েছেন। মূলত: ‘অবৈধ অস্ত্র রাখা’, ‘চাঁদাবাজি”, ‘ভাঙচুর’ ও ‘সরকারী কাজে বাধা দেয়ার’ মতো মিথ্যা অভিযোগে ও হয়রানি করতে তাদের আটক করা হয়েছে।

এছাড়া খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির বিভিন্ন স্থানে বছর জুড়েই ছিল ইউপিডিএফ নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সেনাবাহিনী কর্তৃক ঘরবাড়ি তল্লাশি ও হয়রানিমূলক ঘটনা। প্রাপ্ত তথ্য মতে, সেনাবাহিনী কর্তৃক ১টি বৌদ্ধ বিহারসহ কমপক্ষে ১০৩টি’র অধিক বাড়িতে তল্লাশি, স্কুল ছাত্রসহ ৩৫ জনকে শারীরিক নির্যাতন ও ৩ জনকে আটকের চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে।

২০১৫ সালে গণতান্ত্রিক সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং আয়োজনে সেনাবাহিনী ও পুলিশের ব্যাপক বাধার সম্মুখীন হয় ইউপিডএফ। সরকারীভাবে কোন ধরনের নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠনগুলোকে কোথাও গণতান্ত্রিক সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং করতে দেওয়া হয়নি। দীঘিনালায় বিজিবির ৫১ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার দাবিতে দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটির আয়োজিত শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী হামলা চালিয়ে অনেককে আহত করে। এছাড়া নারীসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়। এমনকি খাগড়াছড়ি ও মানিকছড়িতে সাধারণ জনগণের আয়োজিত বৈসাবি শোভাযাত্রাও পন্ড করে দেওয়া হয় এবং খাগড়াছড়ি শহর পরিচ্ছন্ন অভিযানের মতো জনকল্যাণমূলক কর্মসূচীতেও বাধা দেওয়া হয়। এছাড়া খাগড়াছড়িতে জাতিসংঘ ঘোষিত ফিলিস্তিন সংহতি দিবসের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সেনাবাহিনী হামলা চালিয়ে ১৪ জনের অধিক জনকে আহত করে এবং হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিরূপা চাকমা ও জেলা দপ্তর সম্পাদক দ্বিতীয়া চাকমাকে আটক করা হয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস এবং ইউপিডিএফ-এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালনেও বাধা দেওয়া হয়।

সর্বশেষ গত ৩১ ডিসেম্বর ইউপিডিএফের খাগড়াছড়ি জেলা কার্যালয়ে তল্লাশি চালানো হয়। বলা যায়, পুরো বছরই নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন মোকাবেলা করতে হয়েছে ইউপিডিএফকে। তবে ব্যাপক দমন-পীড়ন সত্ত্বেও ইউপিডিএফ তার কার্যক্রম অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।
——————-

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More