ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় নেতা রুইখই মারমার ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

0

লক্ষ্মীছড়ি প্রতিনিধি ।। খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়িতে ইউনাইটেড পিপলস্ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ রুইখই মারমার ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে।

এ উপলক্ষে আজ ০২ অক্টোবর ২০২০, শুক্রবার সকাল ৯টায় ইউপিডিএফের লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা ইউনিটের উদ্যোগে এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।

স্মরণসভা শুরুর আগে অস্থায়ী শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ইউপিডিএফ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দ ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

সভা শুরুতে শহীদ রুইখই মারমার স্মরণে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

ইউপিডিএফের লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা ইউনিটের সংগঠক সরল চাকমার সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন জাতিসত্তা মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য বিনোদ মুন্ডা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য শুভাশীষ চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য রিতা চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা শাখার নেতা উৎপল চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার তথ্য ও প্রচার সম্পাদক ডেভিট চাকমা, লক্ষ্মীছড়ি থানা শাখার সহ-সভাপতি অর্জুন চাকমাসহ এলাকার মুরুব্বীবৃন্দ।

বক্তারা বলেন, শহীদ রুইখই মারমা পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে একজন দক্ষ নেতা ছিলেন। শাসকগোষ্ঠীর অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি সর্বদা সোচ্চার ভূমিকা পালন করে গেছেন। তিনি কখনো অন্যায় বরদাস্ত করেননি। যার কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে।

বক্তারা রুইখই মারমাকে হত্যার জন্য তৎসময়ের লক্ষ্মীছড়ি জোন কমাণ্ডার লে. কর্নেল শরীফুল ইসলামকে দায়ি করে বলেন, সেনাবাহিনীর এই কমাণ্ডার সমাজের উচ্ছন্নে যাওয়া কিছু বখাটেকে নিয়ে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ সৃষ্টি করে অস্ত্র যোগান দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে। লক্ষ্মীছড়ি সেনা জোনের এই ষড়যন্ত্র চলমান রয়েছে অভিযোগ করে বক্তারা বলেন, লক্ষ্মীছড়ি সদরে এখনো একদল সন্ত্রাসীকে সেনা-প্রশাসনের নিরাপত্তায় রাখা হয়েছে। জনগণের দাবি সত্ত্বেও তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।

রুইখই মারমাকে হত্যা করা হলেও তিনি যে চেতনা লালন করে গেছেন তার কোন মৃত্যু নেই উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, শাসকগোষ্ঠীর মনে রাখা উচিত খুন, গুম, অন্যায় দমন-পীড়ন চালিয়ে কখনো ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন দমন করা যায় না। পার্বত্য চট্টগ্রামে নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ের যে সংগ্রাম চলছে তা কখনো দমিয়ে রাখা যাবে না। অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত প্রজন্মের পর প্রজন্ম এ সংগ্রাম চলতেই থাকবে।

বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ইউপিডিএফের নেতৃত্বে নিপীড়িত জনগণের অধিকার আদায়ের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন দমন করার জন্য শাসকগোষ্ঠী খুন, গুম, অপহরণসহ অন্যায় দমন-পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। এর বিরুদ্ধে মুক্তিকামী জনগণকে রুখে দাঁড়াতে হবে।

স্মরণসভায় বক্তারা রুইখই মারমার লালিত চেতনা ও আদর্শের পথ ধরে অধিকার আদায়ের সংগ্রাম আরো বেগবান করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২ অক্টোবর লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার বর্মাছড়ি ইউনিয়নের বটতলী নামক স্থানে সেনাবাহিনীর সৃষ্ট সিএইচটিএনএফ (পরে বোরখা পার্টি) নামধারী সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র হামলায় রুইখই মারমা নিহত হন। আর এই সন্ত্রাসীদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন তৎকালীন লক্ষ্মীছড়ি জোন কমাণ্ডার লে. কর্নেল শরীফুল ইসলাম।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More