পিসিপি-এইচডব্লিউএফের বিবৃতি
ইতি চাকমা খুনের ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে
খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের ছাত্রী ইতি চাকমা হত্যার ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার মাধ্যমে খুনে জড়িত প্রকৃত অপরাধী বা অপরাধীদের আড়াল করা হচ্ছে– এই অভিযোগ করে আজ সোমবার (৬ নভেম্বর ২০১৭) বৃহত্তর পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচব্লিউএফ)-এর খাগড়াছড়ি জেলা শাখা সংবাদ মাধ্যমে এক যুক্ত বিবৃতি প্রদান করেছে।
খাগড়াছড়ি জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তপন চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা এবং হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক চৈতালী চাকমা উক্ত বিবৃতি প্রদান করেন।
গত শনিবার দিবাগত গভীর রাতে রিপেল চাকমা নামে এক কলেজ ছাত্রকে আটকের পর ‘ইতি চাকমা হত্যার প্রধান আসামি’ হিসেবে জড়িত করার প্রেক্ষিতে নেতৃবৃন্দ এ বিবৃতি প্রদান করলেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, খাগড়াছড়িতে আলোচিত ইতি চাকমা খুনের ঘটনায় সাধারণ ছাত্রকে আটক করার পরে তাদেরকে এই ঘটনায় ‘জড়িত’ বা ‘অপরাধী’ হিসেবে মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে প্রশাসন প্রকৃত খুনিদের আড়াল করে এই মর্মান্তিক হৃদয় বিদারক ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে। আটককৃত সাধারণ ছাত্ররা প্রকৃত অর্থে খুনের সাথে জড়িত অপরাধী প্রমাণিত না হবার পরেও তাদেরকে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কর্মী হিসেবে প্রচার করা এবং তাদেরকে অপরাধী ও খুনী হিসেবে প্রচার করার মাধ্যমে প্রশাসন বিশেষ স্বার্থ হাসিল করতে চাচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, গত শনিবার দিবাগত গভীররাতে রিপেল চাকমা নামে এক কলেজ ছাত্রকে আটক করা হয়। তাকে আটক করার মাস খানেক আগে তুষার চাকমা নামে আরেক ছাত্রকে আটক করা হয়েছিল। তারা দু’জনই খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের ছাত্র। তুষার চাকমাকে আটক করে তার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে ১৬৪ ধারার জবানবন্দী নেয়া হয়েছে। রিপেল চাকমাকে আটকের পরও খাগড়াছড়ি প্রশাসন নানাভাবে এই ঘটনাকে রাজনৈতিক নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এর মাধ্যমে প্রশাসনের প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি-অপাহাড়ি জনগণসহ দেশের সাধারণ জনগণের সরাসরি অবিশ্বাস ও সন্দেহই ঘনীভূত হচ্ছে বলে নেতৃবৃন্দ মন্তব্য করেন।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, এই হত্যার পেছনে যে বা যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাকে বা তাদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় অবশ্যই আনা দরকার। কিন্তু এই হত্যার ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা জনগণ কোনোমতেই মেনে নেবে না এবং প্রয়োজন হলে ছাত্র-জনতা এই অন্যায় অবিচার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ সংঘটিত করবে। এই ঘটনাকে নিয়ে বা এই ধরণের ষড়যন্ত্র করে পাহাড়ের নিপীড়িত জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ও নেতাকর্মীদের উপর হামলা মামলা বরদাস্ত করা হবে না বলে নেতৃবৃন্দ বিবৃতির মাধ্যমে জোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন।
উল্লেখ্য, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়ির জেলা শহরের বাঙালি অধ্যুষিত আরামবাগ এলাকায় তার দুলাভাইয়ের ভাড়া বাসায় ইতি চাকমা নির্মমভাবে খুন হন। ইতি চাকমা খুন হবার পরে এই খুনের প্রতিবাদে ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ সংঘটিত হয়। খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রুবেল নামে একজনের কাছ থেকে ইতি চাকমার ব্যবহৃত মোবাইল পাওয়া যায় বলে আটকের সময় প্রশাসন জানিয়েছিল। কিন্তু তারা হত্যাকাণ্ডের সাথে প্রকৃত অর্থে জড়িত কী না এবং তাদের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা এ বিষয়ে প্রশাসন এখনো কোনো কিছুই জানায়নি।
—————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।