এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ওপর মানসিক নির্যাতনের জন্য সরকার-বিরোধীদল উভয়ই দায়ী- ৮ গণসংগঠন

0

সিএইচটিনিউজ.কম
পার্বত্য চট্টগ্রামে সক্রিয় আট গণসংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, সাজেক নারী সমাজ, সাজেক ভূমি রক্ষা কমিটি, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি ও প্রতিরোধ সাংস্কৃতিক স্কোয়াড আসন্ন এসএসসি পরীক্ষা ও দেশের চলমান পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে আজ রবিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ মাধ্যমে প্রদত্ত এক যুক্ত বিবৃতিতে পরীক্ষার্থীদের ওপর মানসিক নির্যাতন চালানোর জন্য ক্ষমতাসীন সরকার ও বিরোধী দলীয় জোটকে দায়ী করেছেন।

Bibrityবিবৃতিতে আট সংগঠনের নেতৃবৃন্দ হরতালের দিন রুটিন নির্ধারিত বিষয় পিছিয়ে দিয়ে এসএসসি পরীক্ষা চালিয়ে নেয়ার শিক্ষামন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে সঠিক সমাধান নয় জোড়াতালি দিয়ে পার পাওয়ার ভ্রান্ত চেষ্টা মন্তব্য করে বলেন, এতে হয়ত কোন মতে পরীক্ষা সম্পন্ন করা যাবে কিন্তু যে কারণে এ সংকটের সৃষ্টি তা নিরসন হবে না। তারা বলেন, আগামীতে অন্য আরও পাবলিক পরীক্ষা বা কোন জাতীয় কার্যক্রম নিয়ে আবার এর চাইতেও গুরুতর সংকট দেখা দেবে। সংকটের চক্রে পতিত হবে দেশ।

বিবৃতিতে আট সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পুলিশের আইজি, বিজিবি’র মহাপরিচালক, র‌্যাব-এর আইজি ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের বক্তব্যেরও কঠোর সমালোচনা করে বলেন, এসএসসি পরীক্ষার্থীকে যদি এত নিরাপত্তা দিতে হয় তাহলে দেশের অন্যান্য পরীক্ষার ক্ষেত্রে আরও বেশী নিরাপত্তা দিতে হবে। ১৫ লক্ষ এসএসসি পরীক্ষার্থীকে নিরাপত্তা দিয়ে আনা-নেয়ার চিন্তা বালখিল্যতা ছাড়া কিছু নয়।

শুধু ১৫ লক্ষ এসএসসি ও সমমানের দাখিল পরীক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন নয়, গোটা দেশ ও জাতির ভবিষ্যত নিয়ে ভাবা দরকার মন্তব্য করে আট সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে আরও বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধীদল বিএনপিভুক্ত দলসমূহ পরষ্পরের বিরুদ্ধে দোষারোপ করলেও প্রকৃতপ্রস্তাবে এ দু’টি দলই একই গোষ্ঠীভুক্ত, তারা উভয়ে দেশের শাসকগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। পালাক্রমে এরাই দেশের শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে জনগণের বারটা বাজিয়ে চলেছে।

দীর্ঘ বিবৃতিতে আট সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এটাও স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে ‘অপারেশন উত্তরণ’-এর লেবাসে সেনা শাসন জারি থাকায় এ অঞ্চলের জনগণ সবচে’ বেশী দমন-পীড়নের শিকার। এখানে সাম্প্রতিক রাঙ্গামাটি সদর-বগাছড়ি-তাইন্দ্যং সহ বিভিন্ন ধ্বংসযজ্ঞে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন বারে বারে বিঘিœত হয়েছে। পেট্রোল বোমার আঘাতে বাস পোড়ানোর দৃশ্য ও হাসপাতালে আহতের আহাজারির ছবি ও হৃদয় বিদারক দৃশ্য মিডিয়ায় প্রচারিত হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে হামলা-লুটপাট-বাস্তুভিটা জ্বালিয়ে দেয়ার নারকীয় ঘটনা প্রায়ই ঘটে চলেছে। এতে এ অঞ্চলের পরীক্ষার্থীদের মনে কী বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে, নিশ্চয় সারা দেশের পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ উপলদ্ধি করতে সক্ষম হবেন।

বিবৃতিতে আট সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের ১৫ লক্ষ এসএসসি পরীক্ষার্থী নিশ্চয় পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা-দমন পীড়নের শিকার তাদের সমবয়সীদের মর্মবেদনা উপলদ্ধি করবে। ১৫ লক্ষ শিক্ষার্থীর ৩০ লক্ষ অভিভাবক যদি পার্বত্য চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের জীবন ও ভবিষ্যত নিয়ে সৃষ্ট উৎকণ্ঠা উপলদ্ধি করে সমব্যথী হন এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের কথা বিবেচনায় নেন, তাহলে দেশে প্রকৃত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সৌহার্দ্য, সম্প্রীতির সমাজ গড়ে তোলার ক্ষেত্র সৃষ্টি হবে।

আট গণসংগঠনের কনভেনিং কমিটির সদস্য সচিব অংগ্য মারমা স্বাক্ষরে এ বিবৃতি প্রদান করা হয়েছে।
—————

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More