কাপ্তাই হ্রদের পানি কমানোর দাবিতে নান্যাচরে কৃষকদের বিক্ষোভ

0

সিএইচটি নিউজ ডটকম
Nannyachar,নান্যাচর(রাঙামাটি) : বোরো মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদের পানি কমানোর দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে রাঙামাটির নানিয়াচর উপজেলা কৃষকরা। সমাবেশ শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।

সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে স্থানীয় জলেভাসা জমির কৃষকদের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ মাঠ থেকে একটি মিছিল বের করে নান্যাচর বাজার ঘুরে আবার উপজেলা মাঠে গিয়ে সমাবেশ করা হয়।

নান্যাচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিনয় কৃঞ্চ খীসার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সাবেক্ষং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুশীল জীবন চাকমা, বুড়িঘাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রমোদ বিকাশ খীসা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নান্যাচর থানা শাখার সভাপতি রিপন চাকমা, নানিয়ারচর ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার সেন্ট্রো চাকমা ও কৃষক নেতা চিত্ত রঞ্জন চাকমা প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জুম্ম জনগণকে ভাতে ও পানিতে মারার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। সেজন্য কাপ্তাই লেকের পানি যথাসময়ে না কমিয়ে জলেভাসা জমির চাষাবাদে ব্যাহত ঘটাচ্ছে সরকার। তারা অবিলম্বে কাপ্তাই হ্রদের পানি কমানোর দাবি জানান।

বক্তারা আরো বলেন, ১৯৬০ সালে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের ফলে স্থানীয় পাহাড়ি জনগণের প্রায় ৫৪ হাজার একর চাষযোগ্য ধান্য জমি তলিয়ে গেছে। এতে উদ্বাস্তু হয়েছেন লাখের অধিক স্থানীয় পরিবার। ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ পুনর্বাসনসহ স্থানীয় লোকজনকে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়ার কথা বলা হলেও আজ পর্যন্ত কিছুই করা হয়নি। বাঁধ নির্মাণের দীর্ঘ ৫৬ বছরেও রাঙ্গামাটি জেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ পোঁছায়নি।

তারা বলেন, প্রতি বছর শুস্ক মৌসুমে কাপ্তাই লেকের পানি কমালে জলেভাসা জমিতে ধান ও শস্য বীজ রোপন করে বোরো চাষাবাদের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন স্থানীয় পাহাড়ি লোকজন। নভেম্বর মাস হতে পানি কমানোর কথা থাকলেও চলতি মৌসুমে কাপ্তাই লেকের পানি কমাচ্ছে না সরকার। ফলে আজ পর্যন্ত আমরা জলেভাসা জমিতে চাষাবাদ শুরু করতে পারিনি। চাষাবাদ করতে না পারলে জলেভাসা জমির ওপর কৃষি নির্ভরশীল হাজার হাজার পাহাড়ি মানুষকে না খেয়ে মরতে হবে।

সমাবেশ শেষে নান্যাচর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে চার দফা সম্বলিত একটি স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়।

দাবিগুলো হল- প্রতি বছর নভেম্বর মাস হতে কাপ্তাই লেকের পানি কমিয়ে দিয়ে স্থানীয় কৃষকদের জমিগুলো ধান রোপন করার উপযোগী করে দেয়া, জলেভাসা জমির ফসলের অবস্থা বিবেচনা করে লেকের পানির স্তর বাড়ানো-কমানোর ব্যবস্থা নেয়া, হ্রদের পানি না কমানোর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত জলেভাসা জমির মালিকদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেয়া এবং স্থানীয় জলেভাসা জমির মালিকদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ানো-কমানোর সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা।
——————-
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More