কোটা বাতিলের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের বিক্ষোভ

0

চট্টগ্রাম : প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে পাহাড় ও সমতলে অনগ্রসর জাতিসত্তাদের জন্য সংরক্ষিত ৫% কোটা বাতিলের প্রতিবাদে বন্দর নগরী চট্টগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও মহানগর শাখা।

আজ শুক্রবার (৫ অক্টোবর) বিকালে মিছিলটি নগরীর শহীদ মিনার প্রাঙ্গন থেকে শুরু হয়ে নন্দন কানন হয়ে প্রেসক্লাব ঘুরে চেরাগী পাহাড় মোড়ে গিয়ে এক বিক্ষোভ সমাবেশে মিলিত হয়।

পিসিপি মহানগর শাখার সভাপতি হ্লাচিংমং মারমার সভাপতিত্বে ও ছাত্রনেতা অমিত চাকমার সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক  অংকন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মন্টি চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তথ্য প্রচার সম্পাদক ত্রিরত্ন চাকমা। এছাড়া সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিল চবি শাখার সহ-সভাপতি উসাগ্য মারমা, ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরাম চট্টগ্রাম মহানগর শাখার তথ্য প্রচার সম্পাদক টমেস রোয়াজা ও প্রমাছাস এর সংগঠক উজ্জ্বল মারমা।

বক্তারা বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্যকে পাশ কাটিয়ে সরকারি চাকরির ১ম ও ২য় শ্রেণীতে সকল প্রকার কোটা ব্যবস্থা তুলে দিয়েছে। এতে সবচে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে পাহাড় ও সমতলে বসবাসকারী অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠী এবং সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রতিবন্ধী সমাজ।

বক্তারা বলেন, সরকার অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠীর কোটা বাতিলের যুক্তি হিসেবে দেখিয়েছে যে, এখন দেশে আর কেউ অনগ্রসর নেই। সবাই অগ্রসর হয়েছে। কোন প্রকার জরিপ ছাড়া এবং পাহাড়ি নেতৃবৃন্দের সাথে কোন ধরণের আলোচনা না করে সরকার কোনভাবে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারে না বলে তারা মন্তব্য করেন।

বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে বসবাসরত পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠীকে আরো প্রান্তিক করার জন্য এই অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে অনগ্রসর জাতিসত্তাদের জন্য ন্যায্য বিশেষ কোটা ব্যবস্থা না রাখা মানে শাসকগোষ্ঠী তাদের গোলাম, দাস বানিয়ে রাখতে চাওয়ার মনোবৃত্তি প্রকাশ পেয়েছে। মাতৃভাষা বাংলা না হওয়া সত্ত্বেও ভিন্ন জাতিসত্তার শিক্ষার্থীরা বাংলায় পড়াশোনা করতে বাধ্য হয়। ফলে তাদের কাছে পাঠ্যক্রম দুর্বোধ্য হয়ে উঠে। এতে প্রতিবছর অনেক শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ে যায়। বিবিসি বাংলার এক জরিপে দেখা গেছে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রাইমারী লেভেল থেকে ঝড়ে পড়ার হার বেশী। সুতরাং এইসব জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা রাখা জরুরী।

তারা বলেন, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর প্রাপ্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা কেড়ে নেয়ার মাধ্যমে আরো একবার প্রমানিত হয়েছে কোন সরকারই অনগ্রসর জাতিসত্তাদের বন্ধু নয়।

বক্তারা অবিলম্বে পাহাড় ও সমতলে পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর জাতিসত্তাদের জন্য সংরক্ষিত ৫% কোটা পুনর্বহাল করার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানান।
————————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More