"ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক উৎসব ২০১১ বাতিল ও সংখ্যালঘু জাতিসমূহের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি প্রতিনিধি
সিএইচটিনিউজ.কম
ইউএনডিপির আর্থিক সহযোগিতায় পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে “আগামী ৫-১০ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক উৎসব” বাতিল ও সংখ্যালঘু জাতিসমূহের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিতে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে উক্ত তথাকথিত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক উৎসব বর্জনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
আজ ২৭ নভেম্বর ২০১১, রবিবার বেলা ২টায় খাগড়াছড়ি জেলা সদরের মহাজন পাড়া থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে চেঙ্গী স্কোয়ার ঘুরে স্বনির্ভর বাজারে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অর্পন চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক বিপুল চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার তথ্য ও প্রচার সম্পাদক রিনা চাকমা। অন্যদিকে পানছড়িতে দুপুর ১টায় পানছড়ি কলেজ গেট থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে পানছড়ি বাজারের ব্রিজ এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের পানছড়ি থানা শাখার সভাপতি বরুণ চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের পানছড়ি থানা শাখার সভাপতি বিবর্তন চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের পানছড়ি থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক সুমেধ চাকমা।
এছাড়া রাঙামাটি জেলার নান্যাচরে দুপুর দেড়টায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। নান্যাচর উপজেলা সদরের রেস্ট হাউজ মাঠে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি বিলাস চাকমা, নান্যাচর থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক রিপন চাকমা ও নান্যাচর কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক অনিল চাকমা। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নান্যাচর বাজার প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সকল সংখ্যালঘু জাতিসমূহের জাতিগত পরিচয় মুছে দিতে বিভিন্ন মুখী তৎপরতা চালাচ্ছে। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সাংবিধানিকভাবে তাদের ওপর বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। নিজস্ব জাতীয় পরিচয় থাকার পরও এখন তাদেরকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বলে অপমানিত ও অসম্মানিত করা হচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, একটি জাতি কী পরিচয়ে পরিচিত হতে চায় সেটা সে জাতির একান্ত নিজস্ব ব্যাপার। তার ওপর জাতীয় পরিচয় চাপিয়ে দেয়ার অধিকার অন্য কারোর নেই। কিন্তু এ সরকার সংখ্যালঘু জাতিসমূহের নিজস্ব জাতিগত পরিচয়ে পরিচিত হবার অধিকারটুকুও কেড়ে নিয়েছে।
সংখ্যালঘু জাতি সমূহের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে তারা বলেন, বাংলাদেশ একটি বহুজাতিক ও বহু ভাষিক রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও তার প্রতিফলন দেশের সংবিধানে নেই।
বক্তারা অবিলম্বে তথাকথিত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতি উৎসব বাতিল, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সকল সংখ্যালঘু জাতিসমূহকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান ও পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিশেষ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ঘোষণাপূর্বক পূর্ণস্বায়ত্তশাসন দাবি মেনে নেয়ার জোর দাবি জানান।