খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফের ডাকে সড়ক অবরোধ পালিত, আটক ১, সেটলার কর্তৃক দোকানপাট ভাংচুর

0
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
সিএইচটিনিউজ.কম
 
খাগড়াছড়ি:  খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দং-এ পাহাড়ি গ্রামে সেটলার হামলা, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাটের প্রতিবাদে ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-এর ডাকে খাগড়াছড়িতে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ সেটলারদের সাম্প্রদায়িক উস্কানি সত্ত্বেও স্বতঃস্ফুর্তভাবে পালিত হয়েছে।অবরোধের সমর্থনে ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠনের কর্মী সমর্থকরা বিভিন্ন স্থানে পিকেটিং করে। জেলা সদরসহ উপজেলা সমূহের আভ্যন্তরীণ ও দুরপাল্লার সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।

অবরোধ চলাকালে মাটিরাঙ্গা উপজেলার বাইল্যাছড়ি এলাকা থেকে  গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের মাটিরাঙ্গা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সুশান্ত ত্রিপুরাকে (২০) সেটলাররা ধরে সেনা সদস্যদের হাতে তুলে দেয়। পরে তাকে গুইমারা থানায় হস্তান্তর করা হয়। এখনো তিনি গুইমারা থানায় আটক রয়েছেন। এর আগে সুশান্ত ত্রিপুরা গত ৮ জুন গোমতি ইউনিয়নের তাইপা এলাকা থেকে বিজিবি কর্তৃক গ্রেফতার হয়েছিলেন। কিছুদিন আগে তিনি খাগড়াছড়ি জেল থেকে জামিনে মুক্তি পান।

এছাড়া রামগড় উপজেলার তৈচাকমা এলাকায় সেটলাররা পাহাড়িদের দোকানপাট ভাংচুর করেছে বলে জানা যায়। তৈচাকমা এলাকায় কে বা কারা একটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করেছে এমন খবর পেয়ে ডাইনছড়া এলাকা থেকে ২টি জীপ গাড়িতে করে শতাধিক সেটলার তৈচাকমা এলাকায় ঢুকে পাহাড়িদের দুটি দোকান ভাংচুর করে। সেখানে তান্ডব চালানোর পর সেটলাররা চলে যাবার সময় ছোট বেলছড়ি এলাকায় পাহাড়িদের আরো ১টি দোকানে ভাংচুর চালায়। এ সময় সেটলাররা তৈচাকমা গ্রামের দোকানদার অমেন্দ্র ত্রিপুরাকে ধরে নিয়ে যায় এবং মারধর করে তাকে মানিকছড়ি থানায় সোপর্দ করার পর তাকে আহত অবস্থায় মানিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর খাগড়াছড়ি জেলা ইউনিটের প্রধান সংগঠক প্রদীপন খীসা এক বিবৃতিতে শান্তিপূর্ণ অবরোধ চলাকালে সেটলারদের এহেন হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সেটলাররা পরিকল্পিতভাবে এসব সাম্প্রদায়িক হামলা চালিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে।

প্রদীপন খীসা সকাল সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ সফল করায় জেলার সকল যানবাহন মালিক, শ্রমিক সহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনে আগামীতেও সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, তাইন্দং এলাকা থেকে পাহাড়িদের নিজ ভূমি থেকে বিতাড়িত করে জায়গা-জমি বেদখলের লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে সেটলাররা এ হামলা চালিয়েছে।

তিনি বলেন, পাহাড়িদের উপর একের পর এক হামলা ও হামলা প্রচেষ্টা সত্বেও তাদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি এবং হামলার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধেও কোন ধরনের আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এ কারণে সেটলাররা নিরীহ পাহাড়িদের উপর এভাবে দিনে দুপুরে বর্বরোচিত হামলা চালানোর দুঃসাহস পাচ্ছে।

তিনি অবিলম্বে হামলার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান, ঘটনা তদন্তে নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন ও পাহাড়িদের পুর্ণ নিরাপত্তা বিধানের দাবি জানান।

 

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More