খাগড়াছড়িতে অশুভ শক্তি প্রতিরোধ দিবস পালিত
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
সিএইচটিনিউজ.কম
‘পর্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে জাতিসত্তাসমূহের উপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন ও উগ্রসাম্প্রদায়িক হামলা বন্ধ কর’–এই দাবিতে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)-এর উদ্যোগে আজ ৩০ অক্টোবর মঙ্গলবার খাগড়াছড়িতে ‘অশুভ শক্তি প্রতিরোধ দিবস‘ পালিত হয়েছে।
এ উপলক্ষ্যে আজ সকাল সাড়ে ১১টায় খাগড়াছড়ি শহরের স্বনির্ভর বাজার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি উপজেলা পরিষদ এলাকা হয়ে চেঙ্গী স্কোয়ার ঘুরে আবার স্বনির্ভর বাজারে এসে শেষ হয়। মিছিল শেষে সেখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি উমেশ চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক রেমিন চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রদেব চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি মাদ্রী চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক শিমন চাকমা। রজেন্টু চাকমা সমাবেশ পরিচালনা করেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহের উপর নিপীড়ন নির্যাতন ও উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী কর্তৃক হামলার ঘটনা ঘটেই চলেছে। গত ২২-২৩ সেপ্টেম্বর রাঙামাটিতে এবং ২৯-৩০ সেপ্টেম্বর রামু, পটিয়াসহ বৌদ্ধ অধ্যুষিত এলাকায় উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী হামলা চালিয়েছে, বৌদ্ধ বিহার ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করে তছনছ করে দিয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের উচ্ছেদের ল্েয রাষ্ট্রীয় ইন্ধনে ভুমি বেদখল, নারী নির্যাতন, ধর্ষণের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। সরকার তথা শাসকগোষ্ঠি পরিকল্পিতভাবে এসবের ইন্ধন যুগিয়ে যাচ্ছে। সকল প্রকার দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে গর্জে উঠার জন্য বক্তারা ছাত্র সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ সারাদেশে সংখ্যালঘু জাতিসত্তাসমূহের উপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন ও উগ্রসাম্প্রদায়িক হামলা বন্ধের দাবি জানান।
উল্লেখ্য, বিগত ১৯৯৩ সালের ৩০ অক্টোবর খাগড়াছড়িতে ডিসি অফিসে শান্তিপূর্ণ অবস্থান ধর্মঘট পালনের লক্ষ্যে খেজুর বাগান মাঠ হতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের শান্তিপূর্ণ মিছিল শুরু হলে দাঙ্গা পুলিশ বিনা উস্কানিতে হামলা চালায়। মারমুখী পুলিশকে থামাতে গেলে সর্বপ্রথম তৎকালীন পিসিপি সভাপতি প্রসিত খীসা এডিশনাল এসপি‘র হাতে আক্রমণের শিকার হন। তার পর পরই পুলিশ নিরস্ত্র শত শত পিসিপি ও এইচডব্লিউএফ কর্মীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পুলিশের বেপরোয়া লাঠিচার্জে একজনের হাত ভেঙে যায়। গুরুতরভাবে জখম হন ৩০ জনের অধিক হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কর্মী। আহত হয় ২০ জনের অধিক স্কুল-কলেজের ছাত্র। এদিন পুলিশ ছাত্র-জনতাকে ল্য করে ৩৮ রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে এবং ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। এ ঘটনার পর থেকে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ৩০ অক্টোবর দিনটিকে অশুভ শক্তি প্রতিরোধ দিবস‘ হিসেবে পালন করে আসছে।