খাগড়াছড়িতে এইচডব্লিউএফের আরো তিন কর্মী-সমর্থক জামিনে মুক্ত, দেওয়া হলো সংবর্ধনা

0

খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়িতে হিল উইমেন্স ফেডারেশন(এইচডব্লিউএফ)-এর আরো তিন কর্মী-সমর্থক আজ রবিবার (১১ জুন) জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। মুক্তিপ্রাপ্তরা হলেন- হিল উইমেন্স ফেডারেশনের মহালছড়ি উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক পিপি চাকমা ও সমর্থক সোনালী চাকমা ও মেকিনা চাকমা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৮ জুন) ৫জন জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন। এ নিয়ে আটক ৮ জনই মুক্তি পেলেন।

উল্লেখ্য, পাহাড়ি নেত্রী কল্পনা চাকমার চিহ্নিত অপহরণকারী লে. ফেরদৌস গংদের গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে এবং তদন্তের নামে প্রহসন ও কালক্ষেপনের প্রতিবাদে গত ৭ জুন, বুধবার সকালে খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর বাজারে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের আয়োজিত শান্তিপুর্ণ মিছিলে বিজিবি-পুলিশ হামলা চালিয়ে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কর্মী-সমর্থকসহ ২১জনকে আটক করে। পরে ওইদিন বিকালে থানা থেকে ১৩ জনকে ছেড়ে দিলেও বাকি ৮ জনকে থানায় আটকে রেখে গত বৃহস্পতিবার (৮ জুন) আদালতে নেওয়া হয়। আদালত ৫জনকে তৎক্ষনাত জামিন দিলেও পিপি চাকমা, সোনালী চাকমা ও মেকিনা চাকমাকে জামিন না দিয়ে জেলে প্রেরণ করে। আজ রবিবার (১১ জুন) আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করলে তারা জেল থেকে মুক্তিলাভ করেন।

receptionkhg,11.06.17

জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর আজ রবিবার বিকাল ৫টার দিকে স্বনির্ভর বাজারে ফুলের তোড়া দিয়ে তাদেরকে সংবর্ধনা দেয় হিল উইমেন্স ফেডারেশন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের নেতা-কর্মীরা। এ সময় নেতা-কর্মীরা মুর্হুমুর্হু শ্লোগান দিয়ে তাদের স্বাগত জানায়।

পরে ইউপিডিএফ কার্যালয়ের সামনে এক সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ-সভাপতি তপন চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি দ্বিতীয়া চাকমা। এছাড়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের জেলা শাখার সহ-সভাপতি কৃষ্ণ চরণ ত্রিপুরা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সদস্য রূপা চাকমা। অনুষ্ঠানে সদ্য কারামুক্ত সদ্যকারা মুক্ত হিল উইমেন্স ফেডারেশন মহালছড়ি উপজেলা শাখার সাধরণ সম্পাদক পিপি চাকমাও বক্তব্য দেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিন সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।

receptionkhg2,11.06.17

বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, সেদিন শান্তিপূর্ণ মিছিলে কোন প্রকার উস্কানি ছাড়াই বিজিবি-পুলিশ যৌথভাবে হামলা চালিয়ে নারীদের উপর ব্যাপক লাঠিচার্জ করেছে, নারীদের প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছে। শুধু তাই নয় বিজিবি-পুলিশ সদস্যরা স্বনির্ভর বাজারের দোকানপাটে হামলাসহ পার্শ্ববর্তী উত্তর খবংপয্যা গ্রামে ঢুকে ঘরবাড়িতে তল্লাশি, গণধরপাকড় ও জিনিসপত্রও ছিনিয়ে নিয়ে গেছে।

কারামুক্ত পিপি চাকমা বলেন, জেল হলো সংগ্রামীদের একটা ঠিকানা। জনগণের নায্য সংগ্রামকে দমন করার জন্য জেলে পুড়ে নির্যাতন চালানো হয়। সেনাবাহিনীর কমাণ্ডার লে. ফেরদৌস কর্তৃক কল্পনা চাকমাকে অপহরণের ঘটনায় বিচার চেয়ে সেদিন শান্তপূর্ণ মিছিলে বিজিবি ও পুলিশ হামলা চালিয়ে আমাকেসহ ২১ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। সেদিন তারা নারীদের উপর যে বর্বরতায় লাঠিচার্জ করেছে তা কখনো মানা যায় না। তিনি কল্পনা চাকমা অপহরণের বিচারের দাবিসহ নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য নারী সমাজের প্রতি আহ্বান জানান। প্রয়োজন হলে আমাদেরকে আরো জেলে যেতে হবে বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

receptionkhg4,11.06.17

বক্তারা জেল-জুলুম, নিপীড়ন-নির্যাতন মোকাবিলা করে নারীদেরকে আরো বেশি সক্রিয় হয়ে অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠান থেকে বক্তারা স্বনির্ভরে শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা ও নারীদের উপর নির্যাতনের সাথে জড়িত বিজিবি-পুলিশ সদস্যদের বিচার ও এ হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং কল্পনা চাকমার চিহ্নিত অপহরণকারী লে. ফেরদৌস ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তারপূর্বক বিচারের দাবি জানান।
—————
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More