খাগড়াছড়িতে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের ৮ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
খাগড়াছড়ি প্র্রতিনিধি, সিএইচটিনিউজ.কম
“সংবিধানে সকল জাতি ও জাতিসত্তার স্বীকৃতির দাবিতে যুব সমাজ গর্জে উঠুন” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে খাগড়াছড়িতে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের ৮ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে আজ ৫ এপ্রিল ২০১১, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার পেরাছড়া ইউনিয়নের গিরিফুলে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি রেমিন চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অর্পণ চাকমা, বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার সভাপতি চিক্কধন চাকমা, সাজেক ইউনিয়ন কমিটির আহ্বায়ক বিনয় চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি আপ্রুসি মারমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ সভাপতি চন্দনী চাকমা৷ সভা পরিচালনা করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির নেতা নিকোলাস চাকমা।
বক্তারা বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে ধ্বংস করে দেয়ার লক্ষ্যে নানা ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। মিছিল-মিটিঙ ও সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রেখে চরমভাবে ফ্যাসিস্ট দমন-পীড়ন অব্যাহত রেখেছে৷ চট্টগ্রামে কেন্দ্রীয় সম্মেলন পর্যন্ত বানচাল করে দেয়া হয়েছে। বক্তারা অবিলম্বে এ ধরনের ফ্যাসিস্ট আচরণ বন্ধ করে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
বক্তারা আরো বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ সারা দেশে বসবাসরত জাতিসত্তাসমূহকে জাতি হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি না দিয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, আদিবাসি হিসেবে চিত্রিত করে জাতীয় পরিচয়, অস্তিত্ব ধ্বংস করে দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বক্তারা সরকারের এহেন নীতির তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন৷
বক্তারা বলেন, শাসকগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামে যুব সমাজ, ছাত্র সমাজকে ধ্বংস করে দেয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে৷ মদ, গাঁজা, হিরোইন, ফেনসিডিল ইত্যাদি মাদকদ্রব্য অবাধে ঢুকিয়ে দিয়ে যুব সমাজকে নেশাগ্রস্ত রেখে আন্দোলন বিমূখ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। বক্তারা সকল ষড়যন্ত্র চক্রান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিসত্তাসমুহের প্রকৃত মুক্তির লক্ষে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনে অংশ নিয়ে আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
বক্তারা অবিলম্বে সংবিধানে সকল জাতি ও জাতিসত্তার স্বীকৃতি, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনী প্রত্যাহারপূর্বক সেনাশাসনের অবসান, সেটলার বাঙালিদের সমতলে সম্মানজনক পুনর্বাসন ও পার্বত্য চট্টগ্রামে অব্যাহত ভূমি বেদখল বন্ধ করা, তেল-গ্যাস সহ সকল খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান প্রক্রিয়া বন্ধ করা, পাহাড়িদের প্রথাগত ভূমি অধিকারের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও পুর্ণস্বায়ত্তশাসন মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।