খাগড়াছড়িতে তিন সংগঠনের সমাবেশ : রাষ্ট্রীয়-সেনা সৃষ্ট নব্য মুখোশ বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান

0

খাগড়াছড়ি : রাষ্ট্রীয়-সেনা সৃষ্ট ‘নব্য মুখোশ-বোরখা’ বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য পার্বত্যবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গনতান্ত্রিক যুব ফোরাম খাগড়াছড়ি জেলা শাখার নেতৃবন্দ।

আজ শনিবার (১৮ নভেম্বর ২০১৭) সকাল সাড়ে ১০টায় খাগড়াছড়ি জেলা শহর স্বনির্ভর বাজারে ‘নব্য মুখোশ বাহিনী’ লেলিয়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস রুখে দাঁড়াও ছাত্র-জনতা এই শ্লোগানে এবং লোগাঙ ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর ‘নব্য মুখোশ বাহিনীর’ হামলা-অপহরণের চেষ্টা-টাকা ছিনতাই, চাঁদাবাজি-উৎপাত, অস্ত্র গুঁজে দিয়ে গ্রেফতারের মাধ্যমে অযোগ্য সেনা কর্মকর্তার পদোন্নতি লাভ ও জেলা পরিষদে প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের অবৈধ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এক হও! এই আহ্বানে তিন সংগঠনের প্রতিবাদী গণসমাবেশ থেকে এই আহ্বান জানানো হয়।

দেড় ঘন্টাব্যাপী গণসমাবেশে পিসিপি খাগড়াছড়ি জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তপন চাকমার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক পলাশ চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রেশমি মারমা প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, রাষ্ট্রীয়-সেনা সৃষ্ট ‘নব্য মুখোশ-বোরখা’ বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদী গণসমাবেশ বানচাল করে দেয়ার জন্য জুম্ম দালাল-প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী ও ‘নব্য মুখোশ-বোরখা’ বাহিনী সন্ত্রাসীরা সকাল থেকে সদরে উপজেলা হরিনাথপাড়া, কমলছড়ি, ইটছড়ি ও বেতছড়ি এলাকা থেকে আসা জনগণের গাড়ীগুলো সন্ত্রাসী কায়দায় আটকে লাঠি-সোটা নিয়ে হামলা চালায় এবং সেখান থেকে সুমন ত্রিপুরাসহ তিন জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

তারা আরো অভিযোগ করে বলেন,  সেনা সৃষ্ট ‘নব্য মুখোশ-বোরখা’ বাহিনীর সন্ত্রাসীরা গতকালও জেলা শহর জেলা পরিষদ পার্ক থেকে প্রায় অর্ধ শতাধিক মানুষের উপস্থিতিতে পানছড়ি উপজেলার লোগাঙ ইউপি চেয়ারম্যান প্রত্যুত্তর চাকমাকে দিন দুপুরে সেনা-প্রশাসনের নাকের ডগায় অস্ত্রের মুখে অপহরণ করতে চেয়েছিল। এ সময় উপস্থিত কয়েজন এগিয়ে এসে বাধা দিলে নব্য মুখোশ সন্ত্রাসীদের সাথে ধ্বস্তাধ্বস্তি বাঁধে। এরপর অপহরণ করতে ব্যর্থ হলে এক পর্যায়ে টাকার ব্যাগটি ছিনতাই করে দ্রুত পালিয়ে যায়। ঘটনার পর সিনেমা স্টাইলে পুলিশ-বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। সেনা-পুলিশের নিরাপত্তার (?) মধ্যেও দিন দুপুরে শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে কিভাবে, কার আশীর্বাদে নব্য মুখোশ সন্ত্রাসীরা এমন দুঃসাহস দেখায় এ প্রশ্ন রাখেন তিন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

বক্তারা বলেন, অতীতেও রাষ্ট্রীয়-সেনা-প্রশাসন পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে বহু ষড়যন্ত্র করেছিল। ‘মুখোশ-গপ্রক-ঠ্যাঙ্গার বাহিনী-বোরখা’ বাহিনী দিয়ে জুম্ম জনগণের প্রকৃত আন্দোলনকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল, কিন্তু পারে নি। বর্তমানেও রাষ্ট্রীয়-সেনা মদদে ‘নব্য মুখোশ-বোরখা বাহিনী সৃষ্টি করে পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়িত জাতি ও জনগণের সংগ্রামকে থামিয়ে দিতে পারবে না। জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেবে।

বক্তারা আরো বলেন, সেনাবাহিনীর অযোগ্য ও দুনীর্তিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের প্রমোশন বাণিজ্যের শিকার রাজনৈতিক দলের সদস্য ও সাধারণ জনগণ। প্রায়শ অস্ত্র উদ্ধারের নাটক মঞ্চস্থ করে সেনাবাহিনী। সাধারণ নিরপরাধ মানুষকে অস্ত্র গুঁজে দিয়ে ফাঁসানো হচ্ছে।

বক্তারা আরো বলেন, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোর মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষের বিনিময়ে মেধাহীন অযোগ্যরাই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ লাভ করছে। ফলে পার্বত্য এলাকায় শিক্ষা ব্যবস্থা লেজে-গোবরে হয়ে আছে। তিন গণতান্ত্রিক সংগঠন তা বরদাস্ত করবে না।

সমাবেশ থেকে সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলা হয় ‘নব্য মুখোশ বাহিনী’ সৃষ্টি করে জনগণের ভোগান্তি বাড়িয়ে দেয়ার পরিণাম শুভ হবে না। ইউপিডিএফ-এর নেতৃত্বে জনগণ সকল রাষ্ট্রীয় চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র চূর্ণ করে জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম এগিয়ে নিয়ে যাবে।
————-
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

 

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More