খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী শ্মশান বেদখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন
সিএইচটিনিউজ.কম
খাগড়াছড়ি: খাগড়াছড়ি সদর উপজেলাধীন কমলছড়ি ইউনিয়নের মঙ্গলচাঁন পাড়ার ২ শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের একমাত্র শ্মশানটি ভূমিদস্যু জামায়াত নেতা স্কুল শিক্ষক মাহবুল হক সেলিম হুজুর কর্তৃক বেদখলের প্রতিবাদে আজ ২৩ আগস্ট শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বরে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। মানববন্ধনে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
‘মঙ্গলচাঁন পাড়া শ্মশান পুনরুদ্ধার আন্দোলনে সামিল হউন” এই শ্লোগানে মঙ্গলচাঁন পাড়া শ্মশান ভূমি রক্ষা কমিটির ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে বিহারী ত্রিপুরার সভাপতিত্বে ও সুজন ত্রিপুরার সঞ্চালনায় সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান চঞ্চুমনি চাকমা, সাংবাদিক চাইথোয়াই মারমা, ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের দপ্তর সম্পাদক হরিপদ ত্রিপুরা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সদস্য সচিব রিপন চাকমা ও মঙ্গলচাঁন পাড়ার বাসিন্দা বাবুল ত্রিপুরা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বিগত ২০০৪ সালে তৎকালীন ৪ দলীয় জোট সরকারের আমলে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে মাহবুবুল হক সেলিম হুজুরের নেতৃত্বে শ্মশান ভূমিটি বেদখল শুরু হয় এবং বর্তমান পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। বেদখল হতে হতে ৮০ শতক পরিমাণ শ্মশান ভূমিটি বর্তমানে ৫ শতকেরও কম অবশিষ্ট রয়েছে।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ভূমি দস্যুরা পবিত্র শ্মশান ভূমিকে কোন মর্যাদা না দিয়ে দখল করতে থাকলে গ্রামবাসীরা দুর্নীতি দমন কমিশন ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বরাবরে স্মারকলিপি পেশ করলে বিষয়টি তত্ত্বাবধান করার জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, প্রশাসনের সঠিক তদারকি ও তত্ত্বাবধানের গাফিলতির কারণে সেলিম হুজুর শ্মশানটি বেদখলের সাহস পাচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন, মঙ্গলচাঁন পাড়ার শ্মশান ভূমি বেদখল পার্বত্য চট্টগ্রামে সামগ্রিক ভূমি বেদখলেরই অংশ। পাহাড়িদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ করতে এটা পরিকল্পিভাবেই করা হচ্ছে। দীঘিনালায় বিজিবি ব্যাটালিয়ন স্থাপন, বান্দরবানের রুমায় সেনা গ্যারিসন সম্প্রসারণের নামে ভূমি বেদখলের ষড়যন্ত্র তারই প্রত্যক্ষ প্রমাণ।
বক্তারা বলেন, মঙ্গলচাঁনপাড়া ছাড়াও জিরোমাইলের মহালছড়া গ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা জাহেদুল আলম কর্তৃক বিভিন্নভাবে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের জায়গা ও শ্মশান ভূমির কিয়দংশ দখল করে টিনসেট বিল্ডিং নির্মাণ করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে।
বক্তারা ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
তারা অবিলম্বে শ্মশান বেদখলকারী ভূমি দস্যু মাহবুল হক সেলিম সহ তার দোসরদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং বেদখলকৃত ঐতিহ্যবাহী শ্মশান ভূমি পুনরুদ্ধারের জোর দাবি জানান।
————–
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।