খাগড়াছড়িতে দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটির প্রতীকী অনশন

0

সিএইচটিনিউজ.কম
Hungar strikekhagrachar1i,3.03.2015খাগড়াছড়ি: দীঘিনালা বাবুছড়ায় বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর নির্মাণের নামে ভূমি বেদখল বন্ধ, বেদখলকৃত জমি থেকে বিজবি সদস্যদের প্রত্যাহার এবং উচ্ছেদের শিকার ২১ পাহাড়ি পরিবারকে নিজ জমিতে পূনর্বাসনের দাবিতে খাগড়াছড়ি শহরের প্রেসক্লাবের সামনে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করেছে দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটি।

মঙ্গলবার (৩ মার্চ ২০১৫) সকাল ১০টায় দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটির নেতৃবৃন্দ খাগড়াছড়ি ডিসি অফিসের সামনে প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সামনে তারা প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করেন । এতে উচ্ছেদ হওয়া পরিবারের সদস্যরা সহ কয়েকশত নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।

প্রতীকী অনশন থেকে আগামী ৫ মার্চ ২০১৫ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী বাবুছড়া পুরান বাজার থেকে দীঘিনালা উপজেলা সদর পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেন দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটির সাধারন সম্পাদক ধর্মজ্যোতি চাকমা।

10920911_1413066425661241_8516821132498848349_nপ্রতীকী অনশনে দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটির সদস্য প্রদেন্দু চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটির সভাপতি বাবু পরিতোষ চাকমা, দীঘিনালা উপজেলা চেয়ারম্যান নবকমল চাকমা,দীঘিনালা ভূমি রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ধর্ম জ্যোতি চাকমা, দীঘিনালা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান চন্দ্র রঞ্জন চাকমা, কবাখালি ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বকল্যান চাকমা, বাবুছড়া ইউপি চেয়ারম্যান সুগত প্রিয় চাকমা। এছাড়া সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান চঞ্চুমনি, ভাইস চেয়ারম্যান রণিক ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি সচেতন নাগরিক সমাজের সাধারন সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর মিলন দেওয়ান মনাঙ ও শরনার্থী কল্যাণ সমিতির নেতা অজিত বরন চাকমা প্রমুখ।Hungar strikekhagrachari2, 3.03.2015

বক্তরা অভিযোগ করে বলেন, দীঘিনালা উপজেলার ৪নং দীঘিনালা ইউনিয়নের যতœ কুমার কার্বারী পাড়া ও শশী মোহন কার্বারী পাড়া থেকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কর্তৃক জোরপূর্বক উচ্ছেদ হওয়া ২১টি পাহাড়ি পরিবার গত ৯ মাস ধরে অনাহারে, অর্ধাহারে মানবেতর দিনযাপন করছে। সরকার তাদেরকে নিজ জমি ফেরত দেয়া তো দূরে থাক, কোন সহযোগিতা পর্যন্ত দিচ্ছে না।

বক্তারা আরো বলেন, বর্তমানে ৫১ নং ব্যাটালিয়নের বিজিবি সদস্যরা হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণ করে যাচ্ছে। আইনের লোক হয়ে এভাবে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো কোনভাবেই গ্রহণযাগ্য নয়।

বক্তারা বলেন, এ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সহ সরকারের বিভিন্ন মহলের কাছে স্মারকলিপি প্রদান এবং মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হলেও সরকার এখনো পর্যন্ত উচ্ছেদ হওয়া ২১ পরিবারকে তাদের জমি ফেরত দেয়নি। সরকারের ঔদাসীন্য প্রমাণ করে তারা যেন এদেশের নাগরিক নন।

Hungar strikekhagrachari3, 3.03.2015বক্তারা অবিলম্বে বিজিবি কর্তৃক উচ্ছেদ হওয়া ২১ পরিবারকে তাদের নিজ নিজ জমিতে পুনর্বাসন এবং বিজিবির ৫১ নং ব্যাটালিয়নের জন্য জেলা প্রশাসনের অবৈধ জমি অধিগ্রহণ বাতিল করে ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তর প্রত্যাহার; উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলোকে তাদের নিজ নিজ জমি ফিরিয়ে দেয়া; ক্ষতিগ্রস্তদেরসহ ১৫০ জন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে বিজিবির দেয়া মিথ্যা মামলা তুলে নেয়া এবং হামলার সাথে জড়িত বিজিবি, পুলিশ ও সেটলারদের গ্রেফতার করে আইন অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলোকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানান।

উল্লেখ্য, গত বছর ১৪ মে গভীর রাতে বিজিবির ৫১ নং ব্যাটালিয়নের সদস্যরা যতœ কুমার ও শশী মোহন কার্বারী পাড়ায় একটি সদর দপ্তর স্থাপনের জন্য বেআইনীভাবে জমি দখল করে ২১ পরিবার পাহাড়িকে বসতভিটা থেকে তাড়িয়ে দেয়। এই অন্যায় ভূমি বেদখলের বিরুদ্ধে সে সময় প্রতিবাদ করা হলে বিজিবির সদস্যরা হামলা চালিয়ে নারীসহ অনেককে আহত করে, অনেককে গ্রেফতার করে জেলে অন্তরীণ রাখা হয়। উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলো প্রথমে বাবুছড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ও পরে বাবুছড়া ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ে আশ্রয় নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে।
——————-

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

 

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More