খাগড়াছড়িতে প্রশাসন নিরপেক্ষ নয়

0

Khagrachariডেস্ক রিপোর্ট॥ খাগড়াছড়িতে সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসন আদৌ নিরপেক্ষ নয়। ইদানিং বিশেষত গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে এটা লক্ষণীয়। ইউপিডিএফ ও তার সহযোগী সংগঠনকে মিটিং মিছিল করার অনুমতি দেয়া দূরের কথা, কোথাও দাঁড়াতেই দেয়া হচ্ছে না। ইউপিডিএফ ছাড়া অন্যান্য পাহাড়ি সংগঠনগুলোকেও একইভাবে মানববন্ধন পর্যন্ত করতে দেয়া হচ্ছে না।

অপরদিকে কিছু সংগঠন মিছিল মিটিং থেকে শুরু করে সড়ক অবরোধ হরতাল পর্যন্ত পালন করছে। অথচ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের বাধা দেয়া হচ্ছে না। যেমন গত পরশু পার্বত্য বাঙালি ছাত্র পরিষদ চেঙ্গী স্কোয়ার থেকে জঙ্গী বিক্ষোভ মিছিল সহকারে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর গতকাল তারা হরতালের সময় বিভিন্ন জায়গায় পিকেটিং করে। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। অথচ তারপরও পুলিশ কিংবা সেনাবাহিনী তাদের বাধা দেয়নি। বরং এসব সংগঠনের কর্মসূচীর প্রতি তাদের মৌন সমর্থন লক্ষ্য করা গেছে।

অন্যদিকে গতকাল আলুটিলা ভূমি রক্ষা কমিটি শহরে নয়, শহর থেকে অনেক দূরে আলুটিলার গ্রামে রিঝাং ঝর্ণার পাশে সম্মেলন করতে চাইলে বাধা দেয়া হয়। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের হাতে ছিল কাঠের লাঠি। তারা সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। শুধু তাই নয়, সম্মেলন শেষে ফেরার পথে কয়েকজনকে ধাওয়া করা হয়।

গত ৯ আগস্ট একটি পাহাড়ি সংগঠন মানববন্ধন করতে চাইলে তাদেরকেও অনুমতি দেয়া হয়নি। অনুমতি না দেয়ার কোন কারণ প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেখানো হয়নি।

২৩ আগস্ট আলুটিলায় বিশেষ পর্যটন জোন প্রতিষ্ঠার নামে জমি বেদখলের প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি জেলা সচেতন ত্রিপুরা শিক্ষার্থীরা খাগড়াছড়ি কলেজের সামনে মানববন্ধন করে। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়ার কারণে কর্মসূচী সংক্ষিপ্ত করতে হয়। পরে অংশগ্রহণকারীরা বাড়িতে ফেরার সময় উপজেলা অফিসের সামনে একটি বিশেষ মহলের প্ররোচনায় তাদের উপর সেটলাররা হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়।

প্রশাসনের এই পক্ষপাতমূলক আচরণ জেলায় সুষ্ঠু, স্বাভাবিক ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির ক্ষেত্রে এক বড় অন্তরায়। সরকারী প্রশাসন সবার প্রতি নিরপেক্ষ হবে এটাই সবার প্রত্যাশা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একটি রাজনৈতিক দলের নেতা বলেন, দেশে আইন সবার জন্য সমান। কিন্তু দেখা যাচ্ছে প্রয়োগের সময় সমানভাবে হচ্ছে না। নির্দিষ্ট ও পছন্দের সংগঠনকে সভা সমাবেশ হরতাল করতে দেয়া হচ্ছে, আর অন্য কোন সংগঠনকে বিশেষ করে পাহাড়ি সংগঠনকে রাস্তায় পর্যন্ত বের হতে দেয়া হচ্ছে না, এটাতো সাম্প্রদায়িকতা, বৈষম্য। এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

তিনি বলেন, প্রশাসনের দায়িত্ব হলো সবার জন্য, সব দল ও সংগঠনের জন্য গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করা। সবার প্রতি পক্ষপাতহীন আচরণ করা, ন্যায়বিচার করা।

____________

সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More