দৈনিক জনকণ্ঠে গৌতম বুদ্ধকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে আখ্যায়িত করার প্রতিবাদে
খাগড়াছড়িতে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি পেশ
খাগড়াছড়ি: দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় গৌতম বুদ্ধকে ‘সন্ত্রাসী’ ও পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রধান ও পবিত্র ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিতর্কীত করার চক্রান্তের প্রতিবাদে গত ২৭ এপ্রিল বৌদ্ধ মৈত্রী কল্যাণ সংঘ, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা ব্যানারে জেলার বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সাধারণ নাগরিকগণ প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
জেলার প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনের পর প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।
স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন বৌদ্ধ মৈত্রী কল্যাণ সংঘের সভাপতি বিনোদ বিহারী চাকমা, পার্বত্য শরণার্থী কল্যাণ সমিতিরি সাধারণ সম্পাদক সন্তোষিত চাকমা বকুল, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান রণিক ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান কিরণ মারমা, ধর্মপুর আর্য বনবিহার পরিচালনা কমিটির জ্যোতি প্রসাদ চাকমা, মৈত্রী বৌদ্ধ বিহার খাগড়াছড়ির সাধারণ সম্পাদক জিতেন বড়ূয়া, শালবন বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি জ্ঞান বিকাশ চাকমা, পেড়াছড়া ইউপি চেয়ারম্যান তপন বিকাশ ত্রিপুরা, দাতকুপ্যা মৌজার হেডম্যান ও মৈত্রীপুর ভাবনা কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জ্ঞান লাল চাকমা, সমাজ কর্মী ও দশবল বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক দ্বীপায়ন চাকমা, শিবলী বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি যুবতারা চাকমা, সমাজ কর্মী ধীমান খীসা, সমাজ কর্মী এ্যাডভোকেট রিপল চাকমা, এ্র্যাডভোকেট সমারী চাকমা ও সমাজ কর্মী অনুপম চাকমা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বৌদ্ধধর্ম, বৌদ্ধবিহার ও ভাবনাকেন্দ্রগুলো সম্পর্কে বানোয়াট, মিথ্যা ও কল্পনাপ্রসূত তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে ও মহামানব করুণাময় গৌতম বুদ্ধকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে আখ্যায়িত করে সমগ্র বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় সেন্টিমেন্টে আঘাত দেয়া হয়েছে। এবং বৌদ্ধধর্মেরও চরম অবমাননা করা হযেছে।
এধরণের অসত্য ও ষড়যন্ত্রমূলক সংবাদ প্রকাশে তীব্র প্রতিবাদ, নিন্দা ও ক্ষোভ জানানো হয় এবং ফিরোজ মান্নাসহ দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, জনকণ্ঠে প্রকাশিত জনাব ফিরোজ মান্নার প্রতিবেদনটি চাক্রান্তমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এতে বৌদ্ধদের পবিত্র ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বৌদ্ধবিহার, ভাবনাকেন্দ্র, বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং স্বয়ং মহামতি গৌতম বুদ্ধ সম্পর্কে অসত্য ও অভব্য ভাষায় তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত সুপরিকল্পিত এবং ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দেয়ার এক অশুভ প্রচেষ্টা।
স্মারকলিপিতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট ৫ দফা দাবী জানানো হয়। দাবিগুলো হলো (ক) দৈনিক জনকণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদের প্রকৃত উৎস তদন্ত পূর্বক বের করতে হবে। ফিরোজ মান্নাসহ দৈনিক জনকণ্ঠ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। (খ) ধর্মীয় অবমাননামূলক ও মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের জন্য দৈনিক জনকন্ঠকে ভুল স্বীকার করে পত্রিকার প্রথম পাতায় বিবৃতি প্রকাশ করে ক্ষমা চাইতে হবে। (গ) গৌতম বুদ্ধকে ’সন্ত্রাসী’ আখ্যায়িত করে পৃথিবীর বৌদ্ধ সমাজের কাছে দৈনিক জনকন্ঠ পত্রিকা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। আমরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে এ বিষয়ে বিশ্বের বৌদ্ধ সমাজের প্রতি আশ্বাসবাণী স্বরূপ বিবৃতি বা বক্তব্য প্রদান করতে হবে। (ঘ) পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণ করা যাবে না।
_________
সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।