খাগড়াছড়িতে সাম্প্রদায়িক হামলার ২ বছরপূর্তিতে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটিনিউজ.কম
২০১০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়ি জেলা সদরে সেটলার কর্তৃক পাহাড়িদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলার ২ বছরপূর্তিতে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে আজ ২৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় খাগড়াছড়ি জেলা সদরের মহাজন পাড়ায় এ প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আপ্রু মারমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ সাধারণ সম্পাদক হরি কমল ত্রিপুরা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের তথ্য, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রিনা চাকমা।
বক্তারা বলেন, ২০১০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়ি জেলা সদরে পাহাড়িদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। সাজেকে সেনা-সেটলার হামলাকে আড়াল করতে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়িদের উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে শাসকগোষ্ঠির ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের অংশ হিসেবেই সেদিন এই বর্বর হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছিল।
বক্তারা আরো বলেন, হামলার ২ বছর অতিক্রান্ত হলেও ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট এখনো প্রকাশ করা হয়নি, চিহ্নিত হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি এবং ক্ষতিগ্রস্ত সাতভাইয়া পাড়া-মহাজনপাড়াবাসীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয়নি।
বক্তারা বলেন, একটি উগ্রসাম্প্রদায়িক গোষ্ঠিকে ইন্ধন যুগিয়ে একটি শক্তিশালী মহল পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। যার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা বার বার ঘটে চলেছে। বক্তারা সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের বিরুদ্ধে সজাগ ও সতর্ক থাকার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
বক্তারা অবিলম্বে ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ, চিহ্নিত হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা ও ক্ষতিগ্রস্ত সাতভাইয়া পাড়া-মহাজনপাড়াবাসীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান, সভা-সমাবেশের উপর জারিকৃত নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার সহ পাহাড়িদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, ২০১০ সালের ১৯-২০ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটির সাজেকে পাহাড়িদের উপর সেনা-সেটলার হামলার প্রতিবাদে ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউপিডিএফ‘র ডাকা সড়ক অবরোধ চলাকালে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের মহাজন পাড়া ও সাতভাইয়া পাড়া সহ বিভিন্ন জায়গায় পাহাড়িদের উপর সেটলাররা পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক হামলা চালায়। সেটলাররা পাহাড়িদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করে ও ব্যাপক লুটপাট চালায়। এতে ৬০‘টির অধিক পাহাড়ির ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই করে দেয়া হয়।