খাগড়াছড়িতে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলন সম্পন্ন

0

নিজস্ব প্রতিবেদক
সিএইচটিনিউজ.কম

HWF conferenceখাগড়াছড়ি: হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলন আজ ৬ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়িতে সম্পন্ন হয়েছে।

“পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের লড়াইয়ে পাহাড়ের অগ্নিকণ্যা হয়ে আবির্ভুত হোন” শ্লোগানে খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর এলাকার ঠিকাদার সমিতি ভবনের হলরুমে সকাল ৯টায় এ সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কণিকা দেওয়ানের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর খাগড়াছড়ি জেলা ইউনিটের সমন্বয়ক প্রদীপন খীসা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের সহ সভাপতি জ্যোৎস্না রাণী চাকমা, সাজেক নারী সমাজের সভাপতি নিরূপা চাকমা, ঘিলাছড়ি নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সদস্য রমিতা চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা কমিটির সদস্য সচিব রিপন চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি থুইক্যচিং মারমা। হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রীনা দেওয়ান সম্মেলন পরিচালনা করেন।

খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন শাখা থেকে প্রতিনিধি ও পর্যবেক্ষকরা সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।

সম্মেলন শুরুতে অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রিনা চাকমা। শোক প্রস্তাব শেষে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সম্মেলনে বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে নারীদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। শুধুমাত্র নারী অধিকার নিয়ে আন্দোলন করলে হবে না, সমাজ ও জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামেও নারীদেরকে বলিষ্ট ভূমিকা পালন করতে হবে।

বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিনিয়ত নারী নির্যাতন, ভূমি বেদখলসহ পাহাড়ি জনগণের উপর নিপীড়ন-নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। সরকার সংবিধানের বিতর্কিত পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের ভিন্ন ভাষাভাষি জাতি ও জনগণের উপর বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দিয়েছে। সকল নিপীড়ন-নির্যাতন ও অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য নারীদেরকে আরো বেশি সোচ্চার হতে হবে।

প্রতিনিধি সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে সংগঠনের সাংগঠনিক ও আর্থিক রিপোর্ট উপস্থাপন করেন যথাক্রমে সাধারণ সম্পাদক রীনা দেওয়ান ও অর্থ সম্পাদক শিখা চাকমা।

এরপর বেলা ২.০০টায় সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে বিভিন্ন শাখা কমিটি থেকে আগত প্রতিনিধিরা নিজ নিজ এলাকার প্রতিবেদন তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।

সম্মেলন থেকে সরকারের প্রতি ৬ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো:

১. পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে সংঘটিত নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের শ্বেতপত্র প্রকাশ, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা প্রদান ও এর পুনরাবৃত্তি বন্ধ করতে হবে।

২. কল্পনা চাকমা অপহরণের প্রহসনমূলক তদন্ত রির্পোট বাতিল করতে হবে; চিহ্নিত অপহরণকারী লে: ফেরদৌস ও তার দোসরদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে।

৩. পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়ন নির্যাতন বন্ধ এবং হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে।

৪. পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার একমাত্র সমাধান পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের দাবি অবিলম্বে মেনে নিতে হবে।

৫. পার্বত্য চট্টগ্রামে এ যাবৎ সংঘটিত গণহত্যা, অগ্নিংযোগ, লুটপাট এর শ্বেতপত্র প্রকাশসহ প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি দিতে হবে।

৬. বহুল বিতর্কিত সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে সকল জাতিসত্তার সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে।

এছাড়া সংগঠনকে আরো গতিশীল করার লক্ষ্যে সম্মেলনে বিভিন্ন সাংগঠনিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে বলে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রিনা চাকমা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানে হয়েছে।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More