খাগড়াছড়ি আসনে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে বিজয়ী ঘোষণা

0

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটিনিউজ.কম

Kujendra Lalদশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮ নং খাগড়াছড়ি আসনে বেসরকারীভাবে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। তিনি পেয়েছেন ৯৯০৫৮ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ইউপিডিএফ সভাপতি প্রসিত বিকাশ খীসা হাতি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৬৭,৮০০ ভোট। খাগড়াছড়ির রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো: মাসুদ করিম বেসরকারীভাবে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন। বাকী প্রার্থীদের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে সোলায়মান শেঠ পেয়েছেন ৮,১৮০ ভোট, বই প্রতীক নিয়ে জনসংহতি সমিতি(এমএন লারমা) সমর্থিত মৃণাল কান্তি ত্রিপুরা পেয়েছেন ১০,৬২৬ ভোট। এছাড়া মনোনয়ন প্রত্যাহার না হওয়া ইউপিডিএফের উজ্ব্বল স্মৃতি চাকমা’র বই প্রতীকে ৫৫২টি ভোট পড়েছে। বাদ পড়েছে ৬,১১৪টি ভোট।

এবারের নির্বাচনে খাগড়াছড়ির মোট ৩ লাখ ৮১ হাজার ৯শ’ ১৬ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১ লক্ষ ৯২ হাজার ২শ’ ৩০ জন ভোটার। শতাংশের হিসেবে তা পঞ্চাশ ভাগ।

খাগড়াছড়ি জেলা সদরের মোট ভোটার ৭১ হাজার ৮শ’ ১৪ জন। প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ৩৪,১০৪টি। এরমধ্যে নৌকা প্রতীক পেয়েছে ১৬৪৬২ ভোট, হাতি প্রতীক পেয়েছে ১৪,৪৭৮ ভোট, লাঙ্গল প্রতীক পেয়েছে ১,২৪৪ ভোট, বই প্রতীক পেয়েছে ১,৮৪০ ভোট। এছাড়া টেবিল প্রতীকে ভোট পড়েছে ৮০টি।

মহালছড়ি উপজেলায় মোট ভোটার ৩১ হাজার ৮শ’ ৫৮ জন। প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ১৭ হাজার ৯শ’ ৫৩টি। এর মধ্যে নৌকা পেয়েছে ৬,০৮৪ ভোট, হাতি প্রতীক পেয়েছে ৯,১৩৬, লাঙ্গল প্রতীক পেয়েছে ১৮৫, বই প্রতীক পেয়েছে ২০৫৪। এছাড়া টেবিল প্রতীকে ভোট পড়েছে ৬৯টি। বাদ পড়া ভোটারের সংখ্যা ৪২৪টি।

রামগড় উপজেলায় মোট ভোটার ৪৪ হাজার ৬শ’ জন। প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ১৯,২৫৯টি। এর মধ্যে নৌকা পেয়েছে ১২,৭৬১ ভোট, হাতি প্রতীক পেয়েছে ৩,৮১৯, লাঙ্গল প্রতীক পেয়েছে ১,১৯৭, বই প্রতীক পেয়েছে ৩৯৭ ভোট। এছাড়া টেবিল প্রতীকে ভোট পড়েছে ৮৫টি।

দিঘীনালা উপজেলায় মোট ভোটার ৬৫ হাজার ৮শ’ ৭৩ জন। প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ৩২,৪৬৫ ভোট। এর মধ্যে নৌকা প্রতীক পেয়েছে ১৩,০৭৫ ভোট, হাতি প্রতীক পেয়েছে ১৩,৮৯২ ভোট, লাঙ্গল প্রতীক পেয়েছে ৮৬৫ ভোট এবং বই প্রতীক পেয়েছৈ ৩,৩০৩ ভোট। এ উপজেলায় টেবিল প্রতীকে ভোট পড়েছে ৭৫টি।

লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় মোট ভোটার ১৫ হাজার ৯শ’ ৫ জন। প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ১১,০৭৫টি। এর মধ্যে নৌকা প্রতীক পেয়েছে ২,৮৪৬ ভোট, হাতি প্রতীক পেয়েছে ৭,৬৭২ ভোট, লাঙ্গল প্রতীক পেয়েছে ৭১৬ ভোট এবং বই প্রতীক পেয়েছে ২৭ ভোট। এছাড়া টেবিল প্রতীক ভোট পড়েছে ৪০টি। বাদ পড়েছে ৩৩৮টি ভোট।

পানছড়ি উপজেলায় মোট ভোটার ৪২ হাজার ৩শ’ ৭১ জন। প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ২৫,২৫৮টি। এর মধ্যে নৌকা প্রতীক পেয়েছে ৮,৮২৬ ভোট, হাতি প্রতীক পেয়েছে ১২,৩০৮ ভোট, লাঙ্গল প্রতীক পেয়েছে ৭১৬ ভোট এবং বই প্রতীক পেয়েছে ২,০৯৮ ভোট। টেবিল প্রতীকে ভোট পড়েছে ৬৪টি। বাদ পড়েছে ৭৫১টি ভোট।

মাটিরাঙ্গা উপজেলায় মোট ভোটার ৭২ হাজার ৯শ’ ৭০ জন। প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ৩৭,৫১২টি। এরমধ্যে নৌকা প্রতীক পেয়েছে ২৮,৫৯৫ ভোট, হাতি প্রতীক পেয়েছে ৩,৮১৬ ভোট, লাঙ্গল প্রতীক পেয়েছে ২৯৩২ ভোট এবং বই প্রতীক পেয়েছে ৮২২ ভোট। এছাড়া টেবিল প্রতীকে ভোট পড়েছে ৯১টি ও বাদ পড়েছে ১,২৬৫টি ভোট।

মানিকছড়ি উপজেলায় মোট ভোটার ৩৬ হাজার ৫শ’ ২৫ জন। প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ১৩,৯৮৭টি। এর মধ্যে নৌকা প্রতীক পেয়েছে ১০,৪০৮ ভোট, হাতি প্রতীক পেয়েছে ২,০৮৪ ভোট, লাঙ্গল প্রতীক পেয়েছে ৮৮৯ ভোট এবং বই প্রতীক পেয়েছে ৮৩ ভোট। এছাড়া টেবিল প্রতীকে ভোট পড়েছে ৪৯টি ও বাদ পড়েছে ৪৭৪টি ভোট।

খাগড়াছড়ি জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো: মাসুদ করিম ফল ঘোষণার পরপরই আওয়ামী লীগ প্রার্থী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাকে বেসরকারীভাবে বিজয়ী ঘোষণা করেন। এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৪ জন। তারা হলেন, নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, হাতি প্রতীক নিয়ে ইউপিডিএফের সভাপতি প্রসিত বিকাশ খীসা, লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জাতীয় পার্টির সোলায়মান আলম শেঠ ও বই প্রতীক নিয়ে জনসংহতি সমিতি’র(এমএন লারমা মৃণাল কান্তি ত্রিপুরা। এছাড়া মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার না হওয়ায় ইউপিডিএফ নেতা উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমাকে টেবিল প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, খাগড়াছড়ি আসনে মোট ভোটার ছিলেন ৩ লাখ ৮১ হাজার ৯শ’ ১৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ হলেন ১ লক্ষ ৯৭ হাজার ৮শ’ ৬৫ জন আর মহিলা হলেন ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৫১ জন।

খাগড়াছড়ি আসনে মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৮১টি। এর মধ্যে ১৫৯টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপুর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। লক্ষীছড়ি ও দিঘীনালা উপজেলায় ৪টি দুর্গম কেন্দ্রে ব্যবহার করা হয় হেলিকপ্টার।

নির্বাচনে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য কেন্দ্রগুলোতে ছিল প্রায় ৩ হাজার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি নিয়ে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়। এর পাশাপাশি মাঠে ছিল মোবাইল টীম, রিজার্ভ ফোর্স, স্ট্রাইকিং ফোর্স।

নির্বাচনে ১৮১টি ভোট কেন্দ্রে ১শ’ ৮১ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৮শ’ ২৫ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ১ হাজার ৬শ’ ৫০ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করেছেন বলে নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে নির্বাচনে মাটিরাঙ্গা উপজেলায় বেশ কিছু কেন্দ্রে ব্যাপক ভোট জালিয়াতি ও কারচুপির অভিযোগ করেছে ইউপিডিএফের সভাপতি   ও হাতি প্রতীকের প্রার্থী  প্রসিত বিকাশ খীসা। গতকাল ৫ জানুয়ারি রবিবার  রাতে জেলা রিটার্নিং অফিসারে নিকট লিখিত আকারে তিনি এ অভিযোগ দাখিল করেন।

 

 

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More