প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনে সেনা-প্রশাসনের বাধার প্রতিবাদে

খাগড়াছড়ি জেলায় পিসিপি’র অর্ধদিবস সড়ক অবরোধ পালিত, দুই ছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ

0

Dighinala roadblockedখাগড়াছড়ি: বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)-এর ডাকে খাগড়াছড়ি জেলায় অর্ধদিবস সড়ক অবরোধ স্বতঃস্ফুর্তভাবে পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ মে) সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়।

গত ২০ মে দীঘিনালায় পিসিপি’র ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের অন্যায় বাধাদান, সমাবেশের মঞ্চ-প্যান্ডেল ভাংচুর করে দেয়ার প্রতিবাদে সংগঠনটি এ অবরোধ কর্মসূচি পালন করে।

অবরোধ চলাকালে বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও পুলিশ এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ দুই ছাত্রকে আটক করেছে।

অবরোধের সমর্থনে খাগড়াছড়ি শহরের ফায়ার সার্ভিস, চেঙ্গী ব্রীজ এলাকা, স্বনির্ভর ও খাগড়াপুর এলাকাসহ বিভিন্ন উপজেলায় পিসিপি’র নেতা-কর্মীরা পিকেটিং করে এবং টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে।

অবরোধের কারণে জেলা সদর ও উপজেলাসমূহে দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।

অবরোধ চলাকালে সকাল পৌনে ৮টায় জেলা সদরের স্বনির্ভর থেকে পুলিশ খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী রনেল চাকমা ও টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণীর ছাত্র নিকেল চাকমাকে আটক করে থানা নিয়ে যায়। তাদের এখনো ছেড়ে দেওয়া হয়নি।

খাগড়াছড়ি জেলা সদর ছাড়াও পানছড়ি, দীঘিনালা, মহালছড়ি, মাটিরাঙ্গা, গুইমারা, রামগড়, মানিকছড়ি ও লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায়ও স্বতঃস্ফুর্তভাবে অবরোধ পালিত হয়েছে। জনগণ সর্বাত্মকভাবে অবরোধের সমর্থন জানিয়েছে।

মহালছড়িতে রাস্তায় গাছ ফেলে অবরোধ করছে পিসিপি'র কর্মী-সমর্থকরা
# মহালছড়িতে রাস্তায় গাছ ফেলে অবরোধ করছে পিসিপি’র কর্মী-সমর্থকরা

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি সিমন চাকমা ও সাধারণ সম্পাদক বিপুল চাকমা এক বিবৃতিতে অর্ধদিবস অবরোধ সফল করায় জেলার যানবাহন মালিক সমিতিসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে তারা অবিলম্বে আটক দুই ছাত্রকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, পুলিশ অবরোধ কর্মসূচি বানচাল করে দেয়ার জন্য আতঙ্ক সৃষ্টি করতে অন্যায়ভাবে এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ দুই ছাত্রকে আটক করেছে।

বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, সেনাবাহিনী ও প্রশাসন পিসিপি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনে অন্যায়ভাবে বাধা প্রদান করেছে। সেনাবাহিনীকে লেলিয়ে দিয়ে সমাবেশের জন্য প্রস্তুতকৃত মঞ্চ ও প্যান্ডেল ভাংচুরের মাধ্যমে সরকারের চরম ফ্যাসিবাদী চেহারা উন্মোচিত হয়েছে।

সরকার এক দেশে দুই নীতি বজায় রেখে শাসন-শোষণ চালাচ্ছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে তারা বলেন, দেশের অন্যান্য জায়গায় যেখানে গণতান্ত্রিক প্রশাসন চলে সেখানে পার্বত্য চট্টগ্রামে পরিচালিত হচ্ছে সেনাশাসন। নেতৃবৃন্দ বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার একদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাক্যাম্প তুলে নেয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে পাহাড়ি জনগণের সাথে প্রতারণা করছে, অন্যদিকে সেনাবাহিনীর কর্তৃত্ব ও তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়ে গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালনে বাধা সৃষ্টি করছে এবং জনগণের উপর খবরদারি-নজরদারিসহ নানা নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সকল সেনাক্যাম্প প্রত্যাহারপূর্বক সেনাশাসনের অবসান ঘটিয়ে পূর্ণ গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার জোর দাবি জানান।

নেতৃবৃন্দ সরকারের সকল অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য ছাত্র সমাজ ও সর্বস্তরের জনসাধারণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।
————–

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More