খাগড়াছড়ি শহরে বৌদ্ধ বিহারের প্রাচীর ঘেষে পাহাড়ের মাটি কেটে গৃহ নির্মাণ, পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের আশংকা
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, সিএইচটিনিউজ.কম
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা শহরের মহাজন পাড়াস্থ জনবল বৌদ্ধ বিহারের প্রাচীর ঘেষে পাহাড়ের মাটি কেটে গৃহ নির্মানের অভিযোগ উঠেছে এক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ নিয়ে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষের আশংকা করছেন সচেতন মহল। মাটি কাটার ফলে বর্ষা মৌসুমে যে কোন মুহুর্তে প্রাচীরটি ধসে পড়ার আশংকা করছেন বিহার কমিটির সভাপতিসহ পাশ্ববর্তী এলাকার জনসাধারণ।
এলাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খাগড়াছড়ি ব্যবসায়ী মিতালি হার্ডওয়ার-এর মালিক অমল ঘোষ খাগড়াছড়ি শহরের চেঙ্গীস্কোয়ার এলাকার মূল সড়কের পূর্বে এবং মহাজন পাড়াস্থ জনবল বৌদ্ধ বিহারের পশ্চিম পাশে সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে রাতের আঁধারে পাহাড় কেটে ঘর নির্মাণের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। বাঁশের বেড়া, টিনের চাল দিয়ে ঘরবাড়ি চলছে ঘরবাড়ি তৈরির কাজ।
জনবল বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি প্রিয় কুমার চাকমা ও বিহারের কয়েকজন বৌদ্ধ ভিক্ষু সাংবাদিকদেরকে অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ বৎসর এই বৌদ্ধ বিহারটি নির্মিত হলেও বিহারের সীমানা প্রাচীরের পাশে কেউ কখনো পাহাড় কাটেনি। কিন্তু মিতালি হার্ডওয়ারের মালিক অমল ঘোষ এই জায়গাটি ক্রয় করার পর থেকে বিহারের সীমানা প্রাচীরের পাশে অনবরত পাহাড় কেটে এবং প্রাচীরকে ঘিরে ঘর নির্মাণের চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে অমল পাহাড় কেটে বিহারের কিয়দংশ দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। এই রূপ পাহাড় কাটার ফলে বিহারের সীমানা প্রাচীর ও বৌদ্ধ বিহারটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে। বর্ষা মৌসুমে বিহারের সীমানা প্রাচীরের কিয়দংশ ধ্বসে পড়ার আশংকা রয়েছে। যাহা ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি ছাড়া কিছুই না। আমরা বিহারটি রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসনসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ী অমল ঘোষের নিকট তার ব্যবহৃত ০১৮২৪৫০৬৫৩০ নং মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি পাহাড় কাটার কথা স্বীকার করে বলেন, আমার ঘর করা জরুরী তাই কিছু পাহাড় কেটেছি। তাতে আপনার কি? আমার পাহাড় আমি কাটবো কারো অনুমতির প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড় কাটা পুরোদমে নিষিদ্ধ থাকলেও অমল ঘোষ কোন আইনের প্রতি তোয়াক্কা না করায় ভোক্তভোগীরা অসহায় হয়ে পড়ছেন।
খাগড়াছড়ি পৌর কাউন্সিলার মেহেদি হাসান হেলাল বলেন, জেলার প্রভাবশালী মিতালি অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে জনবল বৌদ্ধ বিহারের সীমানা ঘেষে পাহাড় কাটছে, তাছাড়া বিভিন্নস্থানে পাহাড় কাটা হচ্ছে, যা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। এদিকে জেলা শহরে প্রভাবশালীদের পাহাড় কাটার ফলে যেমনি পরিবেশ ভারসাম্য হারাচ্ছে তেমনি বর্ষা মৌসুমে বড় ধরনের টাজ্যেডির আশংকা করছে পার্শ্ববর্তী লোকজন।
মহাজন পাড়া জনবল বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটির যুগ্ন সম্পাদক রিক্তন চাকমা বলেন, পাহাড় কেটে বিহারের ভিতরে মাটি ফেলাচ্ছে, আমরা বাধা দিলেও কোন কর্ণপাত করছে না। প্রভাব খাটিয়ে গায়ের জোর দেখাচ্ছে।
এদিকে, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মোঃ মাসুদ করিম জানান, আমি এখন ঢাকায় আছি, এসে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেব। তদন্ত সঠিকভাবে প্রমান পেলে আইনের কাঠগড়ায় আনা হবে ।