গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের দু’দিন ব্যাপী জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলন শুরু

0
ডেস্ক রিপোর্ট
সিএইচটিনিউজ.কম
খাগড়াছড়ি : “সরকারের জাতি ধ্বংসের নীল নক্সার বিরুদ্ধে যুব শক্তি জাগ্রত হও, প্রতিরোধ গড়ে তোল” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের দু’দিন ব্যাপী জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলনে শুরু হয়েছে।  আজ ২৭ জুন বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় খাগড়াছড়ি জেলা সদরের নারানখিয়াস্থ সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের হলরুমে শুরু হওয়া এ সম্মেলন আগামীকাল ২৮ জুন বিকালে শেষ হবে।
গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি নতুন কুমার চাকমার সভাপতিত্বে সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপল্‌স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রবি শংকর চাকমা, ইউপিডিএফ’র কেন্দ্রীয় সদস্য মি. সচিব চাকমা, ইউপিডিএফ সংগঠক ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাবেক নেতা মিঠুন চাকমা, অলকেশ চাকমা ও দেবদন্ত ত্রিপুরা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কণিকা দেওয়ান ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি থুইক্যচিং মারমা প্রমুখ। এছাড়া মঞ্চে আরো উপস্থিত ছিলেন ইউপিডিএফ’র কেন্দ্রীয় নেতা উজ্জ্বল স্মৃতি চাকমা ও প্রদীপন খীসা। 
সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক নিকোলাস চাকমা ও পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাইকেল চাকমা।উদ্ধোধনী অধিবেশন শুরুতে শহীদদের উদ্দেশ্যে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক এসিংমং মারমা। এ সময় শহীদদের উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সম্মেলনে ইউপিডিএফ নেতা রবি শংকর চাকমা তার বক্তব্যে বলেন, সন্তু লারমা পার্বত্য চট্টগ্রামের আন্দোলনকে সরকারের কাছে বন্ধক দিয়ে রেখেছে। পুরো জাতি আজ সন্তু লারমার কাছে জিম্মি হয়ে রয়েছে। ভাইয়ে ভাইয়ে হানাহানির কারণে সরকার, সেনাবাহিনী ও সন্তু লারমা লাভবান হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা অনেক ছাড় দিয়ে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত নিরসনের জন্য সন্তু লারমার কাছে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা সাড়া দেয়নি। ভবিষ্যতে আমাদের দিক থেকে আর কোন আলোচনার প্রস্তাব দেয়া হবে না। তবে সন্তু লারমারা যদি আলোচনার প্রস্তাব দেন তাহলে আমরা তা বিবেচনা করে দেখবো।

তিনি আরো বলেন, দেশের শাসক দলগুলো জুম্মদেরকে পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী-লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি’র মাধ্যমে বিভাজন তৈরী করে পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার আদায়ের ন্যায়সংগত আন্দোলনকে দুর্বল করে রেখেছে। এদের বিষয়ে সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।

সচিব চাকমা বলেন, আমাদের মা, বোনেরা ধর্ষিত হচ্ছে, খুন হচ্ছে, ভুমি হারাচ্ছি- এ অবস্থায় পার্বত্য চট্টগ্রামের যুব সমাজ হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারে না। এসবের বিরুদ্ধে যুব সমাজকে প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

তিনি আরো বলেন, এক শ্রেণীর সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর কারণে শেখ হাসিনা সরকার আমাদেরকে বাঙালি বানাতে সাহস পেয়েছে। তিনি আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামাত সহ সন্তু লারমাকে জুম্ম জাতির ক্ষতিকর আগাছা উল্লেখ করে বলেন, এরাই আমাদের জাতীয় অস্তিত্ব ধ্বংস করে দিতে চাই। এসব ক্ষতিকর আগাছাকে উপড়ে ফেলতে হবে।

মিঠুন চাকমা বলেন, আমরা যদি শক্তি অর্জন করতে পারি তাহলে অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবো। তিনি বলেন, ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে জনগণের শকিতকে যেভাবে সন্তু লারমা সরকারের কাছে সমর্পন করেছে তা লজ্জ্বাজনক। যারা জাতীয় অধিকার  আদায়ের আন্দোলন সরকারের কাছে বিকিয়ে দিয়েছেন তাদের মুখে থুথু নিক্ষেপ করার, ঘৃণা করার, ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলে দেবার মতো চেতনা সম্পন্ন কর্মী গড়ে উঠতে হবে।

দু’দিন ব্যাপী এ সম্মেলনে তিন পার্বত্য জেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মরত যুব ফোরামের প্রতিনিধি ও পর্যবেক্ষকরা অংশগ্রহণ করেছেন।সম্মেলনে সংগঠনের সাংগঠনিক বিষয় ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি আলোচনা ও ভবিষ্যত কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হবে বলে সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More