গুইমারায় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নামে পাহাড়ি উচ্ছেদের পাঁয়তারা!

0

সিএইচটিনিউজ.কম
Nakkrai charaডেস্ক রিপোর্ট : খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা থানাধীন নাক্রাই ছড়ায় সম্প্রতি একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে নিজ বসতভিটা থেকে চিরতরে উচ্ছেদ হওয়ার আশঙ্কা করছেন ঐ এলাকায় বসবাসরত পাহাড়িরা।

স্থানীয় সূত্রে ও জুম্মো ব্লগের (chtbd.org) সরেজমিন এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গুইমারা সদর থেকে ৬-৭ কি.মি. দূরে ২১২ নং বরইতলী মৌজা ও ২২৮ নং নাক্রাই মৌজার মাঝ বরাবর বয়ে যাওয়া নাক্রাই ছড়ার উপর বাঁধ দিয়ে এ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছে। অনেকটা গোপনেই প্রকল্পটি সম্পন্ন করার তোড়জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

এ প্রকল্পটি যে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে সে ব্যাপারে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি বা পাড়া প্রধানদের সাথে কোন আলোচনা করা হয়নি। মং সার্কেলের চীফও এ বিষয়ে অবগত নন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদন থেকে আরো জানা যায় যে, গত সেপ্টেম্বর মাসের ১৩ তারিখ আর্মিরা নাক্রাইছড়া পরিদর্শনে যান এবং গোটা এলাকা ঘুরে আসেন। সাথে কিছু ছবিও তারা তুলে নেন। এরপর ২৫  তারিখ গুইমারা ক্যাম্পে তারা গোপন বৈঠকে মিলিত হন। তবে এ বৈঠকে পাহাড়ি জনগণের কোন প্রতিনিধিকে রাখা হয়নি। এর আগে ২০১২ সালে রামগড়ের এসিল্যাণ্ড ও কংজরী হেডম্যান উক্ত জায়গাটি পরিদর্শন করেছিলেন।pahari house

এলাকার প্রবেশ কার্বারীর বরাত দিয়ে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, প্রাথমিকভাবে ৩টি স্থান বাঁধ নির্মাণের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে এবং ছড়ার ভাটিতেই এ বাঁধ নির্মাণ করা হবে। কংজরী হেডম্যান জায়গাগুলোর যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে ঐ এলাকার পাহাড়ি জনগণকে আশ্বাস দিয়েছেন। তবে প্রবেশ কার্বারী বলেন যে, তারা কোন ক্ষতিপূরণ নেবেন না। তারা তাদের বাপ-দাদার বসতভিটাতেই বসবাস করবেন।

কংজরী হেডম্যানের বরাত দিয়ে জুম্মে ব্লগের ঐ প্রতিবেদন বলা হয়, এলাকার সার্ভে করা শেষ হয়েছে। এখন টেকনিশিয়ান ও ইঞ্জিনিয়াররা জায়গা মাপজোকের কাজ শুরু করার কথা রয়েছে।

তবে এলাকার পাহাড়িরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, বাঁধ দেয়ার নামে সেখানে সেটলার অনুপ্রবেশের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে।  বাঁধ দেয়া হলে আর্মি ক্যাম্প বসানো হবে। সাথে সাথে সেটলারদেরও এনে বসানো হবে।  তাই সেখানে কোন বাঁধের প্রয়োজন নেই। সৌর বিদ্যুৎ নিয়েই তারা ভালোই আছেন বলে তারা জানিয়েছেন।

মোট কথা, পাহাড়িদের উচ্ছেদ করার লক্ষ্যেই উক্ত এলাকায় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে। যার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে ওই এলাকায় সেটলার বাঙালি পুনর্বাসন করা। ২০০৯-১০ সালের দিকেও  ওই এলাকায় সেটলার পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হয়। তবে পাহাড়িদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে শেষ পর্যন্ত সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়।  তাই সরকারের এ গোপন প্রকল্পের বিরুদ্ধে সচেতন সব মহলকেই এগিয়ে আসা প্রয়োজন বলে মনে করছেন এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

ছবি সৌজন্যে: জুম্মো ব্লগ
——————-

সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More