গোমতি বাজার বয়কট অব্যাহত রাখুন: ডিওয়াইএফ

0
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
সিএইচটিনিউজ.কম
গণতান্ত্রিক ফোরাম(ডিওয়াইএফ) দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত মাটিরাঙ্গায় গোমতি বাজার বয়কট অব্যাহত রাখার জন্য এলাকার জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। তবে সংগঠনটি বলেছে তাদের এই কর্মসূচী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নয়।গত ১৭ জুন প্রচারিত এক প্রচারপত্রে ডিওয়াইএফ এই আহ্বান জানিয়েছে। গত ১৩ জুন গোমতি বাজারে অন্যায়ভাবে ১৪৪ ধারা জারি করে ডিওয়াইএফের সমাবেশ বানচালের প্রতিবাদে এবং বিজিবি কর্তৃক বেআইনীভাবে গ্রেফতার সুশান্ত ত্রিপুরা ও অমল ত্রিপুরার মুক্তি ও পাহাড়ি গ্রামে সেটলার হামলা, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানি বন্ধের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য গোমতি বাজার বয়কটের ডাক দেয়া হয়।

পরদিন শুক্রবার সাপ্তাহিক হাট বারের দিন বাজারে লোক সমাগম হয় খুব কম। পাহাড়িরা বয়কটের ডাকে সাড়া দিয়ে বাজারে যাওয়া থেকে পুরোপুরি বিরত ছিলেন।

প্রচারপত্রে বলা হয়: ‘আমাদের পাহাড়িদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। পেছনে যাওয়ার আর কোন জায়গা নেই। চুপ করে থাকারও উপায় নেই। প্রতিবাদী হওয়া ছাড়া, সংগ্রাম করা ছাড়া আমাদের সামনে আর কোন পথ খোলা নেই। বহিরাগতরা প্রতিনিয়ত আমাদেরকে ঠেলে নিয়ে আসছে। স্বাধীনতার আগে মাটিরাঙ্গা-রামগড়-মানিকছড়ি এলাকায় যেখানে মাত্র হাতে গোনা কয়েকজন বহিরাগত, আজ সেখানে তারা মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ। তাদের দ্বারা জায়গা জমি থেকে বার বার উখাত হতে হতে এখন আমাদের বসতির এলাকা মাত্র কয়েকটি পাহাড়ে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। কিন্তু এখান থেকেও তারা আমাদের উখাত করতে চাইছে। আমাদের বাঁচার এই শেষ সম্বলটুকুও তারা কেড়ে নিতে চাইছে। তাই প্রতিরোধ করা ছাড়া আমাদের আর কোন গত্যন্তর নেই।’গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম মাটিরাঙ্গা উপজেলা শাখা ও গোমতি বাজার বয়কট মনিটরিং কমিটি কর্তৃক প্রচারিত উক্ত প্রচারপত্রে সম্প্রতি মাটিরাঙ্গা-রামগড় এলাকায় সংঘটিত বেশ কয়েকটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার উল্লেখ করে বলা হয়: ‘এভাবে আমাদের উপর প্রতিনিয়ত অন্যায় অত্যাচার চালানো হচ্ছে। আমাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও সম্মানীত মুরুব্বীদের পর্যন্ত হেনস্তা ও অপদস্থ করা হচ্ছে। বিজিবি ও সেনা সদস্যরা আমাদেরকে মানুষ বলে গণ্য করে না, যা ইচ্ছে তাই ব্যবহার করে। আমরা এখন নিজ ভূমিতে পরবাসী, যেন উন্মুক্ত বন্দীশালায় অবরুদ্ধ কয়েদী। আমরা এখানে শত শত বছর ধরে বসবাস করে আসছি, এই জমি-পাহাড় আমাদের প্রাণের সাথে মিশে আছে, অথচ বহিরাগতরা হঠাউড়ে এসে আমাদের জমিগুলো তাদের বলে দাবি করছে। আমাদের জমিতে বসত গড়েছে ও বাগান-বাগিচা করছে।’ ডিওয়াইএফ এর বিরুদ্ধে নারী পুরুষ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

পাহাড়ি ও বাঙালি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে প্রচারপত্রে বলা হয়: ‘বাজার বয়কট কর্মসূচী আপনাদের বিরুদ্ধে নয়, যদিও এজন্য আপনারাও আর্থিক ও অন্যান্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। কিন্তু যেখানে আমাদের কাছ থেকে সভাসমাবেশ করার মতো সাধারণ গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে, যেখানে দিনের পর দিন জনগণের উপর অন্যায় জুলুম চালানো হচ্ছে, সেখানে বাজার বয়কট ছাড়া প্রতিবাদের শান্তিপূর্ণ পন্থা আমাদের সামনে খোলা নেই। আপনাদের প্রতি অনুরোধ, আপনারা আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল হোন এবং এ দাবি মেনে নিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের উপর চাপ দিন। আমরা ঘোষণা করছি: আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি মেনে নেয়া হলে আমরা যে কোন সময় বাজার বয়কট কর্মসূচী প্রত্যাহার করতে রাজী আছি। আর তা না হলে বাজার বয়কট চলতে থাকবে।’

 

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More