ঘাগড়ায় সেনা তল্লাশীর নেপথ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শান্তিমুনি চাকমা

0

কাউখালি(রাঙামাটি) প্রতিনিধি॥ জানা গেছে গতকাল রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জগদীশ চাকমার বাড়িতে সেনা তল্লাশীর নেপথ্যে রয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শান্তিমুনি চাকমা। তার বারংবার অনুরোধে অনেকটা বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওই তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করেছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।

KawkhaliUpazilaRangamati-map2-245x300জগদীশ চাকমার পক্ষে প্রচারণার কাজে যুক্ত এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএইচটি নিউজ ডটকমকে বলেন, গতরাতে (বৃহস্পতিবার) তল্লাশী অভিযানের সাথে জড়িত এক সেনা কর্মকর্তা জগদীশ চাকমাকে ফোনে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী শান্তিমুনি চাকমার অনুরোধে তল্লাশীতে যেতে বাধ্য হন বলে স্বীকার করেন।

উল্লেখ্য, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে একদল সেনা সদস্য ঘাগড়ার জুনুমাছড়ায় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জগদীশ চাকমাসহ তার বেশ কয়েকজন প্রতিবেশীর বাড়িতে তল্লাশী চালায়। ব্যাপক তল্লাশীর পরও বেআইনী কোন কিছু উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে তারা ফিরে যায়।

এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জগদীশ চাকমা গতকাল বিকেলে তাৎক্ষণিকভাবে তার নির্বাচনী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করে বলেন, তাকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই শান্তিমুনি চাকমা তল্লাশীর ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।

শান্তিমুনি চাকমার নির্বাচনী এজেন্ট অংসুইপ্রু চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বীকার করেন জগদীশ চাকমাকে ফাঁসানোর জন্য কৌশল হিসেবে আর্মিদের দিয়ে তল্লাশী করানো হয়েছে। তবে এতে তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়নি বলে তিনি জানান।

তল্লাশীর ঘটনায় এলাকায় জনগণের মধ্যে বেশ প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। কচুখালি গ্রামের চুইচিং মারমা বলেন, নির্বাচনে কলা কৌশল আছে। তাই বলে শান্তিমুনি বাবুর এভাবে নীচুতা দেখানো ঠিক হয়নি। আর্মিদের দিয়ে তল্লাশী করানো মোটেই উচিত হয়নি।

তার এই ভুলের মাশুল তাকে অবশ্যই দিতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ঘাগড়া ইউনিয়নের বর্তমান মেম্বার ও চাম্পাতলী গ্রামের বাসিন্দা শরৎ চন্দ্র চাকমাও অনেকটা একই ধরনের মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, নির্বাচনে হারজিৎ আছে। সেটা মেনে নিতে হবে। শান্তিমুনি বাবু যা করেছেন তা কোনভাবেই ঠিক হয়নি। কেউ সেটা মেনে নেবে না।

তিনি আরো বলেন, ‘আর্মিদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। তাদেরকে কেউ যদি বলে অমুক জায়গায় সন্ত্রাসী আছে, তাহলে তো তাদেরকে বাধ্য হয়ে সেখানে যেতে হবে।’

শান্তিমুনি চাকমার নিকটাত্মীয় এবং মেম্বার পদপ্রার্থী সুন্দরমুনি চাকমা এবং অপর এক মেম্বার পদপ্রার্থী শিবমনি চাকমাও মনে করেন আর্মিদের দিয়ে তল্লাশী করানোটা মোটেই ঠিক কাজ হয়নি। এটা শান্তিমুনির জন্য বুমেরাং হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেএসএস-এর স্থানীয় এক নেতা বলেন, ‘আসলে জগদীশ চাকমার ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে অন্য একজনকে দাঁড় করানো ঠিক হয়নি। জনগণ সেটা ভালো চোখে দেখছে না।’

তিনি বলেন ‘জেএসএস এর বেশীর ভাগ অংশ জগদীশ বাবুর পক্ষে ছিল। কিন্তু হঠাৎ কীভাবে কী কারণে ও কী উদ্দেশ্যে ওয়াদা থেকে সরে এসে অন্য একজনকে সমর্থন করা হলো তা আমি নিজেই বুঝতে পারছি না। পার্টির এ ধরনের ভুল সিদ্ধান্তের জন্য আমাদেরকে বার বার মাশুল দিতে হচ্ছে।’
————–

সিএইচটি নিউজ ডটকম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More