জনসংহতি সমিতির অত্মসমর্পণের ১৭ বছর আজ
সিএইচটিনিউজ.কম
আজ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সাল। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির আত্মসমর্পণের ১৭ বছর পূর্ণ হল। ১৯৯৮ সালের এই দিনে খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে জনসংহতি সমিতির প্রধান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমার নেতৃত্বে শান্তি বাহিনীর সদস্যরা সরকারের কাছে অস্ত্র সমর্পণের মাধ্যমে প্রথম দফা আত্মসমর্পণ করে। এদিন সন্তু লারমা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে নিজে এসএমজি তুলে দিয়ে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান সূচনা করেন। বিনিময়ে শেখ হাসিনা সন্তু লারমাকে একটি সাদা গোলাপ উপহার দেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘ দুই যুগের অধিক চলা সশস্ত্র সংগ্রাম সমাপ্ত ঘোষণা করেন সন্তু লারমা।
আধুনিক প্রযুক্তির বদৌলতে সেদিন মহাসমারোহে আয়োজিত শান্তিবাহিনীর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করে আওয়ামী লীগ সরকার কৃতিত্ব জাহির করে।
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে হাজার হাজার দর্শক ও দেশী-বিদেশী পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতিতে খর রৌদ্রে শান্তিবাহিনী সদস্যদরকে মাঠে বসিয়ে রেখে শেখ হাসিনা বক্তব্য দিতে গিয়ে দম্ভভরে বলেছিলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে সবাই থাকবে, সেনাবাহিনী থাকবে, পাহাড়ি-বাঙালি সবাই থাকবে, যে যেখানে আছে সেখানে থাকবে।… বিশৃঙ্খলা কঠোর হস্তে দমন করা হবে…”। সেদিন সন্তু লারমাকে কোন বক্তব্য দেয়ারও সুযোগ দেয়া হয়নি।
তবে সন্তু লারমা সেদিন সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। সাংবাদিকরা প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সন্তু লারমা বলেন, “…বহুদিন পরে আজ স্বস্তিবোধ করছি।” সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি লোগাঙ গণহত্যা ও কল্পনা চাকমার অপহরণ ঘটনাকে বিতর্কিত বিষয় বলেও মন্তব্য করেছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে জনসংহতি সমিতির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তির শর্ত অনুসারে ৪৫ দিনের মধ্যে জনসংহতি ও শান্তিবাহিনীর সদস্যরা অস্ত্র সমর্পণ করতে বাধ্য হয়। কিন্তু চুক্তিতে সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের সময়সীমা, ভূমি সমস্যার প্রকৃত সমাধান, সেটলারদের প্রত্যাহার…. ইত্যাদি বিষয়ে কোন কিছুই সুনির্দিষ্ট করা হয়নি। ফলে ১৭ বছর অতিক্রান্ত হলেও এ চুক্তি পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের জন্য কোন সুফলই বয়ে আনতে পারেনি।
——————
সিএইচটিনিউজ.কম’র প্রচারিত কোন সংবাদ, তথ্য, ছবি ব্যবহারের প্রয়োজন দেখা দিলে যথাযথ সূত্র উল্লেখপূর্বক ব্যবহার করুন।