জমি বেদখল প্রচেষ্টার প্রতিবাদে খাগড়াছড়ি – রাঙামাটি সড়কে অবরোধ, সেনা-সেটলার কর্তৃক নিরীহ পাহাড়ি নির্যাতনের শিকার

0

নান্যাচর প্রতিনিধি।। রাঙামাটি জেলার নান্যাচরের চৌদ্দ মাইল এলাকায় জমি বেদখল প্রচেষ্টার প্রতিবাদে আজ ২৩ ফেব্রুয়ারী বুধবার পাহাড়ি গ্রামবাসীরা খাগড়াছড়ি – রাঙামাটি সড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে৷ এতে ওই সড়কে সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকে। শত শত পাহাড়ি নারী পুরুষ এ সময় চৌদ্দ মাইলে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখায় ও পাহাড়িদের জমিতে রাখা সেটলারদের গৃহ নির্মাণ সামগ্রী ধ্বংস করে দেয়

সকালে সেনাবাহিনী বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে সত্য চাকমা (২৫) নামে একজনকে গ্রেফতার করে।

এছাড়া নান্যাচর জোনের সেনা সদস্যরা বেতছড়ি বাজারে বেশ কয়েকজন পাহাড়ি স্কুল ছাত্রকে বিনা কারণে মারধর করে৷ সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার পাঁচ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন সুকেন চাকমা পিতার নাম ইন্দ্র বিলাস চাকমা, শ্রেণী নবম; দীপন চাকমা পিতার নাম সুমি রঞ্জন চাকমা, শ্রেণী নবম; রিফাইন চাকমা পিতার নাম তরণী রঞ্জন চাকমা, শ্রেণী অষ্টম; ইন্টু চাকম পিতার নাম আনন্দ বিলাস চাকমা, শ্রেণী সপ্তম; ও রিফেল চাকমা পিতার নাম সুমতি রঞ্জন চাকমা, শ্রেণী ৮ম৷ প্রথম জনের বাড়ি হাজাছড়ি ও বাকি চার জনের গ্রাম দজর পাড়া। তারা সবাই বেতছড়ি জেনারেল ওসমানী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র।

অন্য এক ঘটনায় দুপুর বারটার দিকে বেতছড়িতে সেটলাররা পিন্টু লাল চাকমা (৩২) পিতার নাম পোত্যে মনি চাকমা নামে এক ব্যক্তিকে বেদম মারধর করে। তিনি নান্যাচরের নাদেঅং (লাঙেলপাড়া) গ্রামের বাসিন্দা। গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় তিনি পায়ে হেঁটে ডাক বাংলা থেকে মাইসছড়িতে তার শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। সেটলাররা তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন সেট, টাকা পয়সা ও কাপড় চোপড় কেড়ে নেয়।

সেটলাররা দীর্ঘ দিন ধরে চৌদ্দ মাইল এলাকায় পাহাড়িদের মালিকানাধীন আনুমানিক ১০০ একর জমি বেদখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে৷ প্রায় সময় তারা ওই জমি থেকে পাহাড়িদের গাছ বাশ কেটে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলেও কোন কাজ হয় না। কারণ সেটলাররা সেনাবাহিনীর কাছ থেকে সমর্থন ও উস্কানি পেয়ে থাকে৷ আজ এ ব্যাপারে নান্যাচর ইউএনওর অফিসে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে পাহাড়ি ও বাঙালিদের নিয়ে সভা হওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু সেটলাররা সমঝোতা লঙ্ঘন করে উক্ত জমি জোরপূর্বক দখলের উদ্দেশ্যে গতকাল গৃহ নির্মাণ সামগ্রী জড়ো করলে পাহাড়িরা প্রতিবাদস্বরূপ ওই সভা বর্জন করে৷ জানা গেছে, জনপ্রতিনিধিরাও উক্ত সভায় উপস্থিত থাকেননি।

ইউপিডিএফ রাঙামাটি জেলা ইউনিটের অন্যতম সংগঠক অলকেশ চাকমা ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের আহ্বায়ক মিঠুন চাকমা ছাত্রসহ নিরীহ পাহাড়িদের মারধর ও গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা অবিলম্বে চৌদ্দ মাইলসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বেদখল বন্ধ ও ইতিপূর্বে বেদখলকৃত জমি ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান।

তারা বলেন, সেনাবাহিনী ও সেটলারদের উগ্র সামপ্রদায়িক একটি অংশ পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতিকে সংঘাত ও অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেয়ার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। সারা দেশের জনগণকে এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. AcceptRead More